পুজোর বাজেটে কাটছাঁট! ২০০ যক্ষ্মা রোগীর দায়িত্ব নিল এই দুর্গাপুজো কমিটি

আর কদিন পরই দুর্গাপুজো। চারদিকে যখন উৎসবের প্রস্তুতি তুঙ্গে, ঠিক তখনই এক ভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে নজর কেড়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটের ‘সঙ্কেত ও ছাত্র দুর্গোৎসব কমিটি’। পুজোর বাজেট কমিয়ে তারা প্রায় ২০০ যক্ষ্মা রোগীর এক বছরের খাবারের দায়িত্ব নিয়েছে। এই মানবিক পদক্ষেপের ফলে এলাকার মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে এই ক্লাব।
কোলাঘাটের এই ক্লাবটি সারাবছরই নানা ধরনের সামাজিক কাজ করে থাকে। কৃত্রিম অঙ্গ ও কর্নিয়া দান থেকে শুরু করে রক্তদান শিবিরের মতো বিভিন্ন জনহিতকর কাজের জন্য তারা জেলাজুড়ে বেশ জনপ্রিয়। এবার ৫৩তম বছরে পা দেওয়া দুর্গাপুজো উপলক্ষে তারা আরও এক মহৎ উদ্যোগ নিল। পুজোর সাজসজ্জার বাজেট থেকে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা বাঁচিয়ে সেই টাকা যক্ষ্মা রোগীদের পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহের জন্য খরচ করবে।
জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পূর্ব মেদিনীপুরে বর্তমানে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা ৮১৩ জন। জাতীয় রোগ নির্মূলকরণ কর্মসূচির অধীনে স্বাস্থ্য দপ্তর বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ করলেও, ‘নিক্ষয় মিত্র’ প্রকল্পের মাধ্যমে পুষ্টিকর খাদ্যের ব্যবস্থা করে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সম্প্রতি জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর এই বিষয়ে কোলাঘাটের সঙ্কেত ক্লাবকে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানায়, আর তারা সানন্দে সেই প্রস্তাবে রাজি হয়।
সঙ্কেত ক্লাবের সহ-সভাপতি শ্যামল আদক জানান, “জাতীয় যক্ষ্মা রোগ নির্মূল কর্মসূচির জন্য প্রায় ১০ লক্ষ টাকা খরচ হবে। পুজোর বাজেট কাটছাঁট করে আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি।”
পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস রায় এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “সঙ্কেতের এই উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। এভাবে সবাই এগিয়ে এলে খুব দ্রুত জেলা থেকে যক্ষ্মা রোগ নির্মূল করা সম্ভব হবে।” আগামী বছর দুর্গাপূজা পর্যন্ত এই ক্লাব জেলার সাতটি ব্লকের ২০০ যক্ষ্মা রোগীকে খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করবে।