রহস্যজনক জিপিএস জ্যাম! আকাশপথেও কি এবার ষড়যন্ত্রের শিকার হবেন ভিভিআইপিরা?

সম্প্রতি ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডের লেইনের বিমান আকাশে থাকাকালীন একটি রহস্যজনক ঘটনা ঘটেছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। প্রায় ৩৫ হাজার ফুট উচ্চতায় থাকাকালীন বিমানের জিপিএস (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) হঠাৎ জ্যাম হয়ে যায়। পাইলটদের তৎপরতায় কোনোমতে বিমানটি বুলগেরিয়ার প্লভদিভ বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব দানা বাঁধছে।
ঠিক কী ঘটেছিল?
উরসুলা ভন ডের লেইনের বিমানটি যখন বুলগেরিয়ার উপর দিয়ে যাচ্ছিল, তখন তার জিপিএস এবং রাডার সিগন্যাল জ্যাম হয়ে যায়। ইউরোপীয় কমিশনের পক্ষ থেকে মুখপাত্র আরিয়ানা পোডেস্তা এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন যে, বিমানের জিপিএস সিগন্যালে হস্তক্ষেপ করা হয়েছিল। বুলগেরিয়ার কর্মকর্তারা প্রথমে এই ঘটনাকে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ বলে দাবি করলেও, পরে তারা সেই অভিযোগ অস্বীকার করেন।
তবে এই ঘটনা বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিমানটিতে জিপিএস হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা ছিল, কিন্তু সমস্যা হলো সেই নির্দিষ্ট এলাকায় কোনো জ্যামিং শনাক্ত করা যায়নি। তাই প্রশ্ন উঠেছে, আকাশে কি এমন কোনো ষড়যন্ত্র সম্ভব?
জিপিএস জ্যামিং কীভাবে করা হয়?
এয়ার নেভিগেশন সিস্টেমের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বিশেষ প্রযুক্তির মাধ্যমে বিমানের জিপিএস ও রাডার সিস্টেম জ্যাম করা যায়। এর জন্য বিশেষ জলযানের প্রয়োজন হয়, যেগুলিতে জ্যামার ডিভাইস স্থাপন করা থাকে। এই ডিভাইসগুলি বিমানের জিপিএস ব্যান্ডে একটি বিশেষ শব্দ তৈরি করে, যা আসল সিগন্যালকে ছাপিয়ে যায় এবং জিপিএস সিস্টেমকে পুরোপুরি অকার্যকর করে দেয়।
বিমানের জিপিএস জ্যাম হলে পাইলট মারাত্মক বিপদের মুখে পড়তে পারেন। কারণ জিপিএস সঠিক অবস্থান, দিক ও উচ্চতা সম্পর্কে তথ্য দেয়। জ্যামিংয়ের কারণে নেভিগেশন সিস্টেম বন্ধ হয়ে যায়, ফলে বিমান ভুল দিকে যেতে পারে এবং দুর্ঘটনার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে পাইলটকে ম্যানুয়াল ম্যাপ এবং এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (ATC) ব্যবহার করে নিকটবর্তী বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করতে হয়। এই ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে বিমানে প্রয়োজনীয় সিস্টেম থাকলেও, শুধুমাত্র অভিজ্ঞ পাইলটরাই তা ব্যবহার করতে পারেন।
এই ঘটনাটি বিমানের নিরাপত্তার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষেত্রেও গভীর প্রশ্ন তৈরি করেছে।