‘অরাজক’ বাংলাদেশ, মাদ্রাসা পড়ুয়াদের ‘মধ্যমা’, জেনেনিন চট্টগ্রামে ঠিক কী ঘটেছে?

রাজনৈতিক অরাজকতা এবং সামাজিক অস্থিরতার মধ্যে আরও একটি নতুন ঘটনা জন্ম নিল বাংলাদেশের চট্টগ্রামে। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে একের পর এক হিংসার ঘটনায় সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত। এরই মধ্যে চট্টগ্রামের হাটহাজারিতে মাদ্রাসার পড়ুয়াদের সঙ্গে সুন্নি গোষ্ঠীর মুসলিমদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে। একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষের ফলে এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
ঠিক কী ঘটেছিল?
গত শনিবার রাতে ধর্মীয় মিছিল থেকে ফেরার পথে হাটহাজারি মাদ্রাসার ছাত্রদের সঙ্গে স্থানীয় সুন্নি মুসলিমদের একটি দলের সংঘর্ষ শুরু হয়। ঘটনার সূত্রপাত একটি বিতর্কিত ফেসবুক পোস্ট থেকে। আরিয়ান ইব্রাহিম (২০) নামের এক যুবক হাটহাজারি মাদ্রাসার সামনে অশালীন অঙ্গভঙ্গি করে সেই ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছিল। এই ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাতভর দফায় দফায় সংঘর্ষ চলতে থাকে, বহু মানুষ আহত হন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ মাইকে ছাত্রদের শান্ত থাকার অনুরোধ জানায়। কিন্তু একদল ছাত্র হাটহাজারি বাসস্টেশন এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে কয়েকটি গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। পুলিশ দ্রুত আরিয়ানকে আটক করে এবং সে তার ভিডিও বার্তায় ক্ষমা চাইলেও উত্তেজনা প্রশমিত হয়নি।
প্রশাসন কী ব্যবস্থা নিয়েছে?
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন হাটহাজারিতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মহম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন জানিয়েছেন, শনিবার রাত ১০টা থেকে রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টে পর্যন্ত এই ধারা কার্যকর থাকবে।
- ১৪৪ ধারা: হাটহাজারি উপজেলার মিরেরহাট থেকে ইলেভেন মাইল সাবস্টেশন এবং উপজেলা গেট থেকে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট পর্যন্ত এলাকায় পাঁচ জন বা তার বেশি মানুষের জমায়েত, মিটিং-মিছিল, বিক্ষোভ, অস্ত্র বা দেশীয় অস্ত্র বহন এবং একসঙ্গে চলাফেরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
- পুলিশ মোতায়েন: পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় বিশাল সংখ্যক পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ইউএনও সংশ্লিষ্ট সকল প্রশাসনিক ও সামরিক বাহিনীকে এই নির্দেশনার অনুলিপি পাঠিয়েছেন।
মোহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে এমন লাগাতার সংঘর্ষ, খুন এবং সামাজিক অস্থিরতা বাংলাদেশের জনগণের মনে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।