“দুর্নীতি তো সব জায়গায় হয়”-SSC-র পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থীর ১০ শতাংশ ভিন রাজ্যের

রবিবার রাজ্যজুড়ে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়েছে বহু প্রতীক্ষিত নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা। প্রায় ৩ লক্ষ ১৯ হাজার ৯১৯ জন পরীক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন, যার মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশ বা ৩১ হাজার পরীক্ষার্থী এসেছেন ভিন রাজ্য থেকে। মূলত উত্তরপ্রদেশ, বিহার এবং ঝাড়খণ্ড থেকে আসা এই প্রার্থীরা হিন্দি ও ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষক পদের জন্য আবেদন করেছেন।

কেন বাইরের রাজ্যের পরীক্ষার্থীরা এলেন?

ভিন রাজ্যের পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের নিজ নিজ রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নানা ধরনের সমস্যা রয়েছে। বেশিরভাগই দুর্নীতি, পরীক্ষার অনিশ্চয়তা এবং প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ তুলেছেন।

  • রামজি মিশ্রা, উত্তরপ্রদেশ: ভূগোল বিষয়ে পরীক্ষা দিতে আসা রামজি জানান, পশ্চিমবঙ্গে এসএসসি নিয়ে দুর্নীতির বিস্তারিত কিছু তিনি জানেন না। তবে তিনি শুনেছেন যে এখানে বাইরের রাজ্যের পরীক্ষার্থীদের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, তাই তিনি এসেছেন।
  • কামরান, বিহার: কামরানের সিট পড়েছিল হুগলি গার্লস স্কুলে। তিনি বলেন, “বিহারে কবে পরীক্ষা হবে তার ঠিক নেই। সামনে ভোট আছে, তাই পরীক্ষার তারিখ অনিশ্চিত। তাই এখানে হিন্দি মাধ্যমে ইতিহাসের জন্য চেষ্টা করছি।”
  • রতনেশ কুমার যাদব, উত্তরপ্রদেশ: রতনেশ জানান, ২০১৮ সালের পর থেকে উত্তরপ্রদেশে কোনো শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা হয়নি। “ওখানে পরীক্ষার আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যায়। দুর্নীতি ওখানেও হচ্ছে,” বলেন তিনি।
  • ঝাড়খণ্ডের এক পরীক্ষার্থী: তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে বড় মাপের দুর্নীতি হয়েছে, কিন্তু আমাদের রাজ্যেও দুর্নীতি হয়েছে। আমরা পরীক্ষার্থীরা শুধু আশা নিয়েই বাঁচি, যদি কোথাও সরকারি চাকরি মেলে।”

 

অন্য রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগের অবস্থা

প্রতিবেদনে জানা গেছে, ২০১৮ সালে উত্তরপ্রদেশে ৬৯ হাজার শিক্ষক নিয়োগের তালিকা প্রকাশ করা হলেও এলাহাবাদ হাইকোর্ট সেই তালিকা বাতিল করে দেয়। অন্যদিকে, বিহারে ২৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগের ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

এই পরীক্ষার পর এখন দেখার, ভিন রাজ্যের এই প্রার্থীরা পশ্চিমবঙ্গে চাকরি পান কি না এবং এই নিয়োগ প্রক্রিয়া কতটা স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হয়।