ভিনরাজ্যের পরীক্ষার্থীদের SSC পরীক্ষা, তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে শুরু রাজনৈতিক বিতর্ক

দীর্ঘ ৯ বছর পর অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গে নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলো। এই পরীক্ষা ঘিরে একদিকে যেমন চাকরিহারা শিক্ষকদের অসন্তোষ রয়েছে, অন্যদিকে লক্ষাধিক পরীক্ষার্থী নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন। তবে এই পরীক্ষার একটি বিশেষ দিক রাজনৈতিক মহলে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে—বাংলায় উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের মতো বিজেপি-শাসিত রাজ্যের পরীক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ।
তৃণমূলের খোঁচা বিজেপির দিকে
পরীক্ষাকেন্দ্রে ভিনরাজ্যের পরীক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন। তিনি সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “বাংলার এসএসসি পরীক্ষায় যোগীরাজ্য-সহ একাধিক ভিনরাজ্যের প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। অনেকে বলছেন, তাঁদের রাজ্যে চাকরি নেই, নিয়মিত পরীক্ষা হয় না, বারবার স্থগিত হয়। তাই তাঁরা বাংলায় পরীক্ষা দিতে এসেছেন।” কুণাল ঘোষের দাবি, বিজেপি শুধু বাংলায় চাকরির অভাব নিয়ে সমালোচনা করে, অথচ তাদের শাসিত রাজ্যগুলোর কর্মসংস্থানের চিত্র আরও ভয়াবহ। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, বাংলায় কাউকে বাধা দেওয়া হয়নি বা অপমান করা হয়নি।
বিজেপির পাল্টা জবাব
অন্যদিকে, বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা এই অভিযোগের পাল্টা জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, “দেশের যেকোনো প্রান্তের পরীক্ষার্থী অন্য রাজ্যে গিয়ে পরীক্ষা দিতে পারেন। এতে কোনো অস্বাভাবিকতা নেই। যাদের মানসিকতা সংকীর্ণ, তারাই এভাবে ব্যাখ্যা দিচ্ছেন।” রাহুল সিনহা আরও দাবি করেন যে, “বাংলায় চাকরি টাকা দিয়ে বিক্রি হয়, অন্য রাজ্যে তা হয় না।”
চাকরিহারাদের অসম লড়াই
এই রাজনৈতিক বিতর্কের বাইরে, চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষকরা এই পরীক্ষাকে একটি ‘অসম লড়াই’ বলে অভিহিত করেছেন। আদালতের নির্দেশে ২৬ হাজারেরও বেশি শিক্ষকের চাকরি বাতিল হওয়ার পর, তাদের অনেকেই কালো পোশাক পরে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা অভিযোগ করেছেন, অনেক প্রাক্তন পরীক্ষার্থীকে নতুন পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হচ্ছে না এবং পুরনো সহকর্মীদের ইনভিজিলেটর হিসেবে দেখতে পেয়ে তাদের মানসিক চাপ আরও বেড়েছে।
এদিকে, স্কুল সার্ভিস কমিশন বারবার স্বচ্ছতার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছে এবং জানিয়েছে যে আদালতের রায় মেনেই ধাপে ধাপে নিয়োগ প্রক্রিয়া এগোবে। অযোগ্য ঘোষিতদের এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতি নেই।