রথযাত্রায় অনিয়মের অভিযোগ, ইসকনের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি

জগন্নাথদেবের রথযাত্রা ও স্নানযাত্রা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে আয়োজনের জন্য ইসকনকে কড়া সতর্কবার্তা দিয়েছে পুরীর জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষ। দ্বাদশ শতাব্দীর এই প্রাচীন মন্দিরের দাবি, ইসকনের এই ধরনের পদক্ষেপ ধর্মীয় ঐতিহ্য এবং শাস্ত্রের অমর্যাদা করছে। বারবার আলোচনা সত্ত্বেও ইসকন তাদের ভুল শুধরাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
পুরীর রাজা ও মন্দির পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান গজপতি দিব্যসিংহ দেব বলেন, “ইসকন গত ৫০ বছর ধরে জগন্নাথ মহাপ্রভুর নানাবিধ অনুষ্ঠান বছরের যেকোনো সময়, যেকোনো স্থানে পালন করছে। এতে অগণিত ভক্তের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লাগছে।” তিনি আরও বলেন, যদি এই সমস্যার সমাধান না হয়, তবে ইসকনের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
১০০ পাতার পরামর্শ ও অভিযোগ
পুরীর জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষ মায়াপুর ইসকন কর্তৃপক্ষের কাছে একটি ১০০ পাতার বিস্তারিত প্রতিবেদন পাঠিয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, কীভাবে ইসকন ধর্মীয় শাস্ত্রের নিয়মাবলী লঙ্ঘন করছে। প্রামাণ্য দলিল ও বিশেষজ্ঞের যুক্তি দিয়ে বোঝানো হয়েছে, কেন ঐতিহ্য মেনে নির্দিষ্ট দিনে, বিশেষ করে আষাঢ় মাসে রথযাত্রা এবং জ্যৈষ্ঠ পূর্ণিমা তিথিতে স্নানযাত্রা পালন করা উচিত।
ইসকনের জবাব
এই অভিযোগের বিষয়ে ভুবনেশ্বরে ইসকনের জনসংযোগ আধিকারিক রাধাকান্ত দাস জানান, এই ইস্যু নিয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজন আছে। তিনি বলেন, “আমরাও জানি জ্যৈষ্ঠ পূর্ণিমা এবং আষাঢ় শুক্লপক্ষের দ্বিতীয় তিথিতে জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। তবে বিশ্বের সব প্রান্তে অবস্থিত মন্দির এবং কেন্দ্রগুলোর সিদ্ধান্ত আমরা এককভাবে নিতে পারি না।”
এই বছর ভারতের ৬৮টি জায়গায় ইসকন রথযাত্রা আয়োজন করেছিল, কিন্তু বিশ্বের অন্যান্য দেশে তারা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে এই উৎসব পালন করেছে। পুরীর মন্দিরের এই কঠোর অবস্থানের পর এই বিতর্কের জল কতদূর গড়ায়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।