বিশেষ: চন্দ্রগ্রহণের সময়ে কেন খাবার খেতে নেই? জেনেনিন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা

প্রতিবার সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণের সময় একটি প্রশ্ন ঘুরেফিরে আসে: গ্রহণের সময় কি খাবার খাওয়া উচিত? শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ভারতীয় সংস্কৃতিতে এই সময়ে খাবার খাওয়া এবং রান্না করাকে অশুভ মনে করা হয়। কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞান কি এই ধারণাকে সমর্থন করে?
ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, চন্দ্রগ্রহণের ৯ ঘণ্টা আগে সূতক কাল শুরু হয়। এই সময়টিকে অপবিত্র মনে করা হয়, তাই এ সময় রান্না করা বা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। যতক্ষণ না গ্রহণ শেষ হচ্ছে, খাবারে তুলসি পাতা দিয়ে রাখা হয়। ধারণা করা হয়, মহাজাগতিক শক্তি অসন্তুষ্ট থাকলে গ্রহণ হয় এবং এই সময়ে খাবার খেলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই অনেক ধর্মপ্রাণ মানুষ এ সময় উপবাস করেন। জ্যোতিষীরাও এই সময় ধ্যান ও যপ করার পরামর্শ দেন।
বিজ্ঞানীরা দাবি করেন, গ্রহণের সময় খাবারের ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়ে না। এটি সম্পূর্ণ ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে তৈরি একটি ধারণা। তবে কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন, চন্দ্রগ্রহণের সময় যেহেতু রাতে খাবার খাওয়া হয়, তাই দেরিতে খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে। সম্ভবত এই বৈজ্ঞানিক যুক্তিটিই ধর্মীয় বিশ্বাসের সঙ্গে মিলে গেছে।
ঐতিহ্য অনুযায়ী, গ্রহণের সময় গর্ভবতীদের অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে বলা হয়। তাদের ঘর থেকে বেরোতে এবং ধারালো জিনিস ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়। তাদের না খেয়ে থাকারও পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে বিজ্ঞান এই ধরনের কোনো ধারণাকে সমর্থন করে না। এগুলি যুগ যুগ ধরে চলে আসা ধর্মীয় বিশ্বাস ও ঐতিহ্য।
জ্যোতিষী পণ্ডিত রাজেশ শর্মা বলেছেন, “গ্রহণ শুরুর আগে খাওয়া-দাওয়া সেরে ফেলা উচিত। ধর্মীয় বিশ্বাসের সঙ্গে নিজেকে একাত্ম করতে এই পরামর্শ মেনে চলা জরুরি।”
অর্থাৎ, গ্রহণের সময় খাবার খাওয়া বা না খাওয়া সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিশ্বাস ও ঐতিহ্যের ওপর নির্ভরশীল।