‘মাতৃত্বের অপমান’, ডিএনএ টেস্ট নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ দিল ওড়িশা হাইকোর্ট

সম্পত্তির উত্তরাধিকার সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে এক গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে ওড়িশা হাইকোর্ট। আদালত জানিয়েছে, যদি কোনো মা নিজেই সন্তানের পরিচয় নিশ্চিত করেন, তাহলে সেই সন্তানের ডিএনএ টেস্ট করার দাবি মাতৃত্বের অপমান এবং এটি মহিলার মর্যাদাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

মামলার প্রেক্ষাপট
৫৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তির পিতৃপরিচয় নিয়ে এই মামলাটি শুরু হয়েছিল। ওই ব্যক্তি পৈতৃক সম্পত্তির ভাগ পেয়েছিলেন। কিন্তু অন্য এক আবেদনকারী দাবি করেন যে ওই ব্যক্তি তাদের পরিবারের সদস্য নন এবং তিনি সেই ব্যক্তির সন্তানও নন। নিম্ন আদালত ডিএনএ টেস্টের আবেদন খারিজ করে দিলে আবেদনকারী হাইকোর্টে মামলা করেন।

হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ
এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি বিপি রাউতরে বলেন, যখন মা নিজেই আদালতে উপস্থিত হয়ে জানিয়েছেন যে ওই ব্যক্তি তার সন্তান এবং তার প্রয়াত স্বামীই তার বাবা, তখন ডিএনএ টেস্টের দাবি করা শুধু অযৌক্তিক নয়, বেআইনিও। এই ধরনের কাজ মহিলার মাতৃত্ব ও মর্যাদায় আঘাত করে, যা করার অধিকার কারও নেই।

বিচারপতি ভারতীয় সাক্ষ্য আইনের ১১২ নম্বর ধারা উল্লেখ করে বলেন, একমাত্র আইনি প্রয়োজন থাকলে তবেই ডিএনএ পরীক্ষার দাবি উঠতে পারে, এবং সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ হলেই এই ধরনের পরীক্ষা করা উচিত নয়। পাশাপাশি, তিনি বলেন, ডিএনএ টেস্ট যার হবে এবং মামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গোপনীয়তার অধিকার অবশ্যই সুরক্ষিত রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, পরিবারের বাইরের কোনো ব্যক্তির এমন বিষয়ে প্রশ্ন তোলার অধিকার নেই। এক্ষেত্রে আবেদনকারী নিজের এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে কাজ করেছেন বলেও আদালত মন্তব্য করে।