কাউকে না জানিয়ে ২৫ লাখ টাকা খরচ করে স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করলেন তরুণী

পরিবারের কাছে ছুটি কাটানোর কথা বলে সুইজারল্যান্ডে গিয়েছিলেন। কিন্তু ছুটি কাটাতে নয়, বরং নিজের জীবন শেষ করার জন্য। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে আইরিশ নারী মরিন স্লাফের সঙ্গে। ৫৮ বছর বয়সী এই নারী গত ৮ জুলাই তার পরিবারকে বলেছিলেন যে তিনি বন্ধুদের সাথে লিথুয়ানিয়ায় যাচ্ছেন। অথচ তিনি গোপনে স্বেচ্ছামৃত্যুর জন্য সুইজারল্যান্ডে যান।
এই খবর জানার পর হতবাক হয়ে যায় তার পরিবার। মরিন মারা যাওয়ার মাত্র একদিন আগে তার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু তার মেয়ে মেগান রয়্যালকে এই গোপন পরিকল্পনার কথা জানান। কিন্তু শেষ মুহূর্তে মেগান আর কিছুই করতে পারেননি।
মেগান রয়্যাল সংবাদমাধ্যম আইরিশ ইনডিপেনডেন্টকে জানান, “তার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু রাতে, সম্ভবত রাত ১০টার দিকে আমাকে মেসেজ করে। আমি তখন আমার বাচ্চাকে নিয়ে বিছানায় ছিলাম। তিনি আমাকে বলেন, তোমার মা সুইজারল্যান্ডে আছেন। তিনি আসলে ঘুরতে নয় স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করতে এসেছেন। এ কথা শুনে আমি খুব ভয় পেয়ে যাই।”
ঘটনা জানার পর তাৎক্ষণিকভাবে মেগান তার বাবাকে জানান। এরপর তারা সুইজারল্যান্ডে মরিনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু তার পরদিনই মেগান একটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পান। সেখানে লেখা ছিল তার মা মারা গেছেন। হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজটি পাঠিয়েছিল স্বেচ্ছামৃত্যুতে সহায়তা করা একটি অলাভজনক সংস্থা ‘পেগাসাস’।
কোম্পানির বিরুদ্ধে ক্ষোভ
মেগান রয়্যাল পরে জানতে পারেন, তার মা গোপনে এই কোম্পানির কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করেন এবং সব প্রক্রিয়া শেষে সুইজারল্যান্ডে যান। মরিনের মৃত্যুর পর তার পরিবার এখন দাবি জানিয়েছে, কীভাবে তাদের সম্মতি ছাড়া মরিনকে স্বেচ্ছামৃত্যুতে সহায়তা করল কোম্পানিটি।
মেগান জানান, তার মা মানসিক রোগে ভুগছিলেন। তার দুই বোন মারা যাওয়ার পর তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। তবে তার অবস্থা এতটা খারাপ ছিল না যে তাকে এই চরম সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। এই স্বেচ্ছামৃত্যুর জন্য মরিন বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন বলেও জানা যায়।
মেগান বলেন, “সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার ছিল, শুধু মায়ের মৃত্যুর তথ্য নয়, তারা আমাকে জানায় মায়ের মরদেহের ছাই ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে আমার কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। তখন মনে হয়েছিল আমার পৃথিবীটা শেষ হয়ে গেছে।”