বাংলায় হল পাচ্ছে না ‘বেঙ্গল ফাইলস’, রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখলেন অভিনেত্রী পল্লবী যোশী

বহু বিতর্কিত ছবি ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস’ পশ্চিমবঙ্গে একটিও প্রেক্ষাগৃহে জায়গা পেল না। সরকারিভাবে কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও, প্রেক্ষাগৃহ মালিকরা ছবিটি প্রদর্শন করতে রাজি হচ্ছেন না। এই পরিস্থিতিতে ছবির অভিনেত্রী ও প্রযোজক পল্লবী জোশী সরাসরি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে একটি খোলা চিঠি পাঠিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, থিয়েটার মালিকদের উপর রাজনৈতিক চাপ এবং ভয় দেখানো হচ্ছে, যে কারণে তাঁরা এই ছবিটি দেখাতে অনিচ্ছুক।
‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-এর পর বিবেক অগ্নিহোত্রী পরিচালিত এই ছবিটি তুলে ধরেছে ১৯৪৬ সালের ‘ডাইরেক্ট অ্যাকশন ডে’, নোয়াখালির দাঙ্গা এবং দেশভাগের মতো ঐতিহাসিক পটভূমি। ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মিঠুন চক্রবর্তী, অনুপম খের, পল্লবী জোশী, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, দর্শন কুমার ও সৌরভ দাস।
পল্লবী জোশী তাঁর চিঠিতে অভিযোগ করেছেন, এই ছবি কোনো রাজনৈতিক প্রচার নয়, বরং এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনার উপর ভিত্তি করে তৈরি। ছবির সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র থাকলেও, রাজ্যে একটি ‘অনানুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞা’ জারি রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। হল মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা ভয় পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। এর আগে ছবির ট্রেলার লঞ্চ অনুষ্ঠানও কলকাতার একটি হোটেলে বাতিল করা হয়েছিল। সেই সময় তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ অভিযোগ করেছিলেন, এই ছবি বিজেপির রাজনৈতিক প্রচারে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং এর উদ্দেশ্য সমাজে বিভাজন সৃষ্টি করা।
ছবিটির মুক্তি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রামী গোপালচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের নাতি শান্তনু মুখোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, ছবিতে তাঁর দাদুকে ‘ছাগলের’ প্রতীক হিসেবে দেখানো হয়েছে, যা মানহানিকর। বিচারপতি অমৃতা সিনহা জানিয়েছেন, তিনি সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পরই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
অন্যদিকে, শহরের নামকরা হলগুলো যেমন নবিনা, প্রিয়া ও মেনোকা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাদের কাছে এই ছবিটি দেখানোর জন্য কোনো স্লট ফাঁকা নেই। এমনকি মাল্টিপ্লেক্স চেইনগুলোও একই কথা বলেছে। তবে ছবির প্রযোজকদের দাবি, এটি ইচ্ছাকৃত বর্জন। তাই তাঁরা সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার জন্য রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। এই বিতর্কের ফলে ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস’-এর মুক্তির পথ আরও জটিল হয়ে উঠেছে।