১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা মিঠুনের, চিটফান্ড নিয়ে পাল্টা হুঁশিয়ারি কুনালের

কলকাতার রাজনৈতিক ও বিনোদন জগতে নতুন করে উত্তাপ ছড়াচ্ছে আইনি লড়াই। বিজেপি নেতা ও অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী রাজ্যের তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের করেছেন। এর আগে কুণালকে আইনি নোটিস পাঠালেও, সন্তোষজনক জবাব না পেয়ে এবার সরাসরি আদালতের দ্বারস্থ হলেন মিঠুন। এই মামলার খবর প্রকাশ্যে আসতেই পালটা মামলা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কুণাল ঘোষও।
কেন এই মামলা?
মিঠুনের অভিযোগ, কুণাল ঘোষ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাঁর ও তাঁর পরিবারের সম্মানহানি করেছেন। কুণাল বিভিন্ন সময় সংবাদমাধ্যমে মিঠুনের বিরুদ্ধে চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছেন। এছাড়াও, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কারণ হিসাবে ব্যক্তিগত স্বার্থরক্ষার কথা বলেছেন। মিঠুনের ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়েও কুণাল আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ। মিঠুনের মতে, এসব মন্তব্য মিথ্যা, ভিত্তিহীন এবং তাঁর সামাজিক ও পেশাগত জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তিনি পদ্মভূষণ ও দাদাসাহেব ফালকে সম্মানপ্রাপ্ত একজন শিল্পী এবং প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ। কুণালের মন্তব্যের জেরে নতুন ছবি ও বিজ্ঞাপনের কাজ পেতে তাঁর অসুবিধা হচ্ছে বলে জানান তিনি। তাই ক্ষতিপূরণ হিসাবে ১০০ কোটি টাকা দাবি করেছেন। জানা গেছে, মিঠুন ইতিমধ্যেই ৫০ হাজার টাকা কোর্ট ফি জমা দিয়েছেন।
কুণালের পাল্টা হুঁশিয়ারি
মিঠুনের মামলার খবর প্রকাশ্যে আসার পরই পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কুণাল ঘোষ। তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, মিঠুন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে তিনিও মানহানির মামলা দায়ের করবেন। কুণাল বলেন, “আমি এখনও নোটিস পাইনি, কিন্তু শুনেছি মিঠুন ১০০ কোটি টাকার মামলা করেছেন। আমি ওঁর বিরুদ্ধে মামলা করব, শীঘ্রই নোটিস পাঠাব।” কুণাল আরও বলেন, “যে কথায় কথায় দল বদল করে, তাঁর নিজেরই কোনো মর্যাদা নেই।” নকশাল, শিবসেনা, তৃণমূল এবং এখন বিজেপির প্রসঙ্গ টেনে কুণাল মিঠুনের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
কুণাল আরও জানিয়েছেন, তিনি চিটফান্ড মামলার সমস্ত নথি হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন, যা পেলে তিনি সমস্ত মামলা সিবিআই তদন্তের জন্য হস্তান্তরের আর্জি জানাতেন। এখন যেহেতু মিঠুন নিজেই আইনি লড়াইয়ের পথ বেছে নিয়েছেন, তাই আদালতে দুজনেরই মুখোমুখি দেখা হবে।
এই দুই হেভিওয়েট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের আইনি সংঘাত নিয়ে ইতিমধ্যেই সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়া সরগরম। আদালত কবে এই মামলার শুনানি শুরু করে, এখন সেটাই দেখার বিষয়।