পাহাড়ি এলাকায় বেআইনি ভাবে গাছ কাটায় বাড়ছে দুর্যোগ? যা জানালো সুপ্রিম কোর্ট?

উত্তর ভারতের হিমালয় লাগোয়া অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রনের ডিভিশন বেঞ্চ এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পেছনে পাহাড়ে বেআইনিভাবে গাছ কাটা চলছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

সম্প্রতি একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গিয়েছিল, হিমাচল প্রদেশে বন্যার জলের সঙ্গে পাহাড় থেকে নেমে আসছে বিপুল সংখ্যক গাছের গুঁড়ি। শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই এই বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, “বন্যার সময় বিপুল সংখ্যক কাঠের গুঁড়ি নদীতে ভেসে আসতে দেখা গিয়েছে। আপাতত মনে হচ্ছে, বেআইনি ভাবে গাছ কাটা চলছে। পাহাড়ের উপরেও এই কাজ হচ্ছে।”

এই ঘটনাকে অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক, জলশক্তি মন্ত্রক, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ (NDMA), জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ (NHAI) এবং পাঞ্জাব, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্য সরকারগুলিকে নোটিশ জারি করেছে। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে দ্রুত এই বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জনস্বার্থ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের কাছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দাবি জানানো হয়েছে: ১. একটি বিশেষ তদন্ত দল (SIT) গঠন করে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করা। ২. পরিবেশ ও সড়ক নির্মাণ সংক্রান্ত আইনের কোনো লঙ্ঘন হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা। ৩. হিমালয়ের পরিবেশ এবং সেখানকার নদীগুলো সংরক্ষণে নজর রাখা। ৪. সংবিধানের ১৪ ও ২১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নাগরিকদের জীবনের অধিকার রক্ষায় পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, দুই সপ্তাহ পর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হিমালয় অঞ্চলের রাজ্যগুলোতে অতিবৃষ্টির কারণে আকস্মিক বন্যা ও ধসের ঘটনা বেড়েছে, যা এই জনস্বার্থ মামলাকে আরও প্রাসঙ্গিক করে তুলেছে।