ভারতের ওপর ট্রাম্পের ৫০% শুল্কনীতি, মার্কিন-ভারত সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন মার্কিন প্রশাসন সম্প্রতি ভারতের ওপর নতুন করে ৫০% শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছে। এর মধ্যে রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য ২৫% অতিরিক্ত শুল্কও অন্তর্ভুক্ত। এই নীতিকে কেন্দ্র করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে এবং মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, ট্রাম্পের এই “স্বেচ্ছাচারী শুল্কনীতি” দীর্ঘদিনের মার্কিন-ভারত সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

মার্কিন কংগ্রেসের হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সিনিয়র সদস্য গ্রেগরি মিক্স ভারতের রাষ্ট্রদূত বিনয় মোহন ক্বাত্রার সঙ্গে বৈঠকের পর বলেন, “আমরা ভারতের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চাই, কিন্তু ট্রাম্পের এই স্বেচ্ছাচারী শুল্কনীতি এই গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে হুমকির মুখে ফেলছে।”

কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্যরাও ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে বলেছেন যে, এটি শুধুমাত্র আমেরিকানদেরই ক্ষতি করছে না, বরং মার্কিন-ভারত সম্পর্ককেও ধ্বংস করছে।

মাইক পেন্স: প্রাক্তন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স বলেছেন, “আমেরিকার শুল্কের মূল্য শেষ পর্যন্ত আমেরিকান কোম্পানি ও ভোক্তাদেরই দিতে হয়।”

জন বোল্টন: প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন এই পদক্ষেপকে “ভুল” বলে মন্তব্য করে সতর্ক করেছেন যে, এর ফলে ভারত চীন ও রাশিয়ার আরও কাছাকাছি চলে যেতে পারে।

নিকি হ্যালি ও কেনেথ জাস্টার: প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি এবং কেনেথ জাস্টারও উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন যে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক দুর্বল হলে তা মার্কিন কৌশলগত স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর হবে।

ভারত সরকার জানিয়েছে যে, রাশিয়া থেকে তেল আমদানির বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কিত, কারণ সাশ্রয়ী মূল্যের তেল দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য। মার্কিন শুল্কের এই চাপ মোকাবিলা করার জন্য রাষ্ট্রদূত ক্বাত্রা বেশ কয়েকজন মার্কিন আইনপ্রণেতার সঙ্গে বৈঠক করে দ্বিদলীয় সমর্থন চেয়েছেন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এই নতুন শুল্ক প্যাকেজ শুধু দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য নয়, বরং কৌশলগত অংশীদারিত্ব এবং জ্বালানি সহযোগিতাকেও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে, যা আগামী দিনে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।