স্ত্রীর সঙ্গে বিবাদ মেটানোর নামে সালিশি সভা ডেকে ২ লক্ষ টাকা দাবি। টাকা দিতে না পারায় অপহরণ ও দোকানে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার মতো মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে। এই ঘটনাটি ঘটেছে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার মালিওর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের নারায়ণপুর এলাকায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নারায়ণপুরের বাসিন্দা গোলাম রসুলের সঙ্গে বিহারের রিজওয়ানা পারভিনের বিয়ে হয়। পারিবারিক অশান্তির জেরে রিজওয়ানার পরিবার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার সিভিক ভলান্টিয়ার তারিকুল ইসলামের দ্বারস্থ হয়। গত ২৩ আগস্ট তারিকুল সালিশি সভা ডাকেন এবং সেখানে গোলামের কাছে ২ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়।

গোলামের পরিবার জানায়, তারা টাকা দিতে রাজি না হলে তারিকুল এবং মেয়ের পরিবারের সদস্যরা মিলে তাকে জোর করে অপহরণ করে বিহারের কাটিহারে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে পুলিশ গোলামকে উদ্ধার করে।

গোলামকে উদ্ধারের পর তারিকুলের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা দায়ের করা হয়। এর পরই মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দেওয়া শুরু হয়। গোলামের অভিযোগ, তারিকুল তাকে ফোনে হুমকি দিয়েছিল যে তারা বড় ক্ষতি করবে। সেই হুমকির পরই গত মঙ্গলবার রাতে গোলাম ও তার ভাই মাসুদ আলমের দোকানে রহস্যজনকভাবে আগুন লেগে যায়।

গোলাম বলেন, “তারিকুল দলবল নিয়ে আমাদের দোকান জ্বালিয়ে দিয়েছে।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী তাজমুল হোসেনের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করছে না।

ক্ষতিগ্রস্ত যুবকের ভাই মাসুদ আলম বলেন, “ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে মিটমাট করার জন্য তারিকুল ২ লক্ষ টাকা চেয়েছিল। সেই টাকা না দেওয়ায় সে আমার ভাইকে অপহরণ করে। এবার মামলা না তোলায় আমাদের দোকান জ্বালিয়ে দিল।”

অন্যদিকে, অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার তারিকুল ইসলাম নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। তার অভিযোগ, তাকে ফাঁসানোর জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমি কাউকে অপহরণ করিনি বা টাকাও দাবি করিনি। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গেও আমি জড়িত নই।”

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। বিজেপির জেলা সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল বলেন, “শাসকদলের প্রভাব খাটিয়ে সিভিক ভলান্টিয়ারের এই দাদাগিরি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।” রাজ্যের মন্ত্রী তাজমুল হোসেন বলেন, “ঘটনা কী হয়েছে তা জানি না, তবে কেউ যদি আইন নিজের হাতে তুলে নেয়, তবে তার জন্য পুলিশ ও প্রশাসন রয়েছে।”