‘বাংলাতেই আমার কন্ঠরোধের চেষ্টা! আমি বাংলাতেই বলব’, বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বিজেপিকে আক্রমণ মমতার

বাংলা ভাষা ও বাঙালিদের ওপর অত্যাচারের প্রতিবাদে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতা ঘিরে বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় তুমুল হট্টগোল ও বেনজির পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই হট্টগোলের জেরে বিজেপির মুখ্য সচেতক শঙ্কর ঘোষসহ মোট তিন বিধায়ককে সাসপেন্ড করেন স্পিকার।

অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধে মুখ্যমন্ত্রী যখন বাংলা ভাষার ওপর আক্রমণের বিষয়ে বক্তব্য রাখতে শুরু করেন, তখনই বিজেপির বিধায়করা তুমুল স্লোগান ও হট্টগোল শুরু করেন। এর আগে, স্পিকারের অনুমতি নিয়ে অগ্নিমিত্রা পাল বক্তৃতা দিলেও, নির্দিষ্ট সময়ের পর তার মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়, যা নিয়ে বিজেপি ক্ষুব্ধ ছিল।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি ধিক্কার জানাচ্ছি। এরা জেনেশুনেই, আমার কথা যাতে মানুষ শুনতে না পারে, আমার কন্ঠরোধ করার জন্যই ওদের এই কর্মসূচি।” তিনি অভিযোগ করেন যে, বিজেপি বিধায়করা পরিকল্পিতভাবে এসেছেন। তিনি আরও বলেন, “আমি বলবই, আমার কন্ঠরোধ করা যাবে না।”

হট্টগোলের জেরে স্পিকার বারবার সতর্ক করার পরেও শঙ্কর ঘোষ থামেননি। এরপর স্পিকার তাকে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দেন। কিন্তু শঙ্কর ঘোষ নিজের আসনে অনড় থাকেন এবং তাকে ঘিরে বিজেপি বিধায়করা স্লোগান দিতে থাকেন। এরপর নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে বের করে আনার চেষ্টা করলে তুমুল ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এই উত্তেজনার মধ্যেই বিজেপি বিধায়করা কাগজ ছুড়ে মারেন।

এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুনরায় বক্তব্য রাখেন এবং বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেন। তিনি বিজেপিকে ‘দেশের সবচেয়ে বড় ডাকাত’ এবং ‘বাংলা বিরোধী’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, “স্বাধীনতার পর একটা দল, যাদের স্বাধীন করার জন্য কোনো ভূমিকা ছিল না, তারা এখন মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরি করছে।” তিনি বিজেপি-তে যোগ দেওয়া দলবদলু বিধায়কদেরও তীব্র সমালোচনা করেন।

শেষ পর্যন্ত তুমুল অশান্তির কারণে শঙ্কর ঘোষ, অগ্নিমিত্রা পাল এবং মিহির গোস্বামীকে সাসপেন্ড করেন স্পিকার।