একই ঘরে ৪টি ক্লাস! মেঝেতে বসে পড়ুয়ারা, ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের দুরবস্থা ভাবিয়ে তুলবে

একটি মাত্র শ্রেণিকক্ষ, মাঝে প্লাইউডের পার্টিশন। একদিকে চলছে প্রি-প্রাইমারি ও প্রথম শ্রেণির ক্লাস, অন্যদিকে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ক্লাস। বসার জন্য বেঞ্চ নেই, কংক্রিটের মেঝেতে শতরঞ্চি বিছিয়েই পড়াশোনা করে কচিকাঁচারা। এই চিত্র কোনো প্রত্যন্ত গ্রামের নয়, বরং ঝাড়গ্রাম শহরের বুকে আট বছর ধরে চলছে এমন করুণ অবস্থা।

২০১৮ সালে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ঝাড়গ্রাম শহরের নৃপেণপল্লি এলাকায় জঙ্গলখাস জুনিয়র হাইস্কুলের একটি শ্রেণিকক্ষে শুরু হয়েছিল জঙ্গলখাস ইংরেজি মাধ্যম প্রাইমারি স্কুল। আট বছর ধরে আবেদন করেও স্কুল কর্তৃপক্ষ নিজস্ব ভবন তৈরি করতে পারেননি। কারণ, এই স্কুলের নিজস্ব ডাইস (ডিস্ট্রিক্ট ইনফর্মেশন সিস্টেম ফর এডুকেশন) কোড নেই। এই কোড না থাকলে সরকারি অনুদান বা ভবন তৈরির অনুমোদন মেলে না।

বর্তমানে ৬০ জন পড়ুয়া এখানে পড়াশোনা করে। শুধু ঝাড়গ্রাম শহর নয়, আশপাশের রাধানগর, অন্তপাতি এলাকা থেকেও ছেলেমেয়েরা আসে। স্কুলের এক শিক্ষক জানান, “ইংরেজি মাধ্যমের পড়াশোনার জন্য স্মার্ট ক্লাসরুম দরকার হয়, কিন্তু এখানে বাচ্চাদের বসার জন্য বেঞ্চও নেই। শীতে মেঝে ঠান্ডা থাকে, বর্ষায় স্যাঁতসেঁতে হয়ে যায়।”

প্রথম, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়ারা জানায়, যেদিন সবাই স্কুলে আসে, সেদিন বারান্দায় বসেই ক্লাস করতে হয়। নিজেদের স্কুল থাকলে ভালো করে বসার জায়গা পেত তারা। অভিভাবকদের পঠনপাঠন নিয়ে অভিযোগ না থাকলেও, নিজস্ব ভবন না থাকার কারণে তারা খুবই হতাশ। ডাইস কোড না থাকার কারণে স্কুলের নিজস্ব মিড-ডে মিল বা ইউনিফর্মের ব্যবস্থাও নেই। মিড-ডে মিল এবং ইউনিফর্মের জন্য জঙ্গলখাস জুনিয়র হাইস্কুলের ওপরই নির্ভর করতে হয়।

ঝাড়গ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান জয়দীপ হোতা বলেন, “স্কুলটি নতুন শুরু হয়েছে। ডাইস কোড না পাওয়ার কারণেই সরকারি সহায়তা মিলছে না। ডাইস কোড পেলেই ভবন তৈরির সরকারি অনুমোদন পাওয়া যাবে।” তিনি আরও জানান, এই স্কুলের জন্য ডাইস কোডের আবেদন করা হয়েছে। এখন দেখার, কবে এই শিশুরা একটি নিজস্ব স্কুল ভবন পায়।