ভয়ংকর দৃশ্য! নদীগর্ভে স্কুল, গাছতলায় চলছে ক্লাস, চরম দুর্ভোগে পড়ুয়ারা

তিস্তা নদীর ভাঙনে স্কুলবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পর থেকে গত এক বছর ধরে গাছতলাতেই চলছে ক্লাস। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের কানাইনগরপাড়া নিউ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের এমনই চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। খোলা আকাশের নিচে ক্লাস হওয়ায় বর্ষায় পড়াশোনা বন্ধ থাকে, আর গরমেও পড়ুয়াদের কষ্ট সহ্য করতে হয়।
অভিভাবকদের অভিযোগ, স্কুল ভবন নদীতে তলিয়ে যাওয়ার পর প্রশাসনের একাধিক আধিকারিক এসে পরিস্থিতি দেখে গিয়েছেন এবং বিডিও নতুন ভবন তৈরির প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি এখনো পূরণ হয়নি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক গৌতম সরকার জানান, কানাইনগরপাড়া ছাড়াও কালামপুর, বাহির চর, মাখলিয়াপাড়া, ধরপরার চরের ছেলেমেয়েরা এই স্কুলে পড়াশোনা করে। কিন্তু ভবন না থাকায় মিড-ডে মিল এক কিলোমিটার দূর থেকে রান্না করে নিয়ে আসতে হয়।
অভিভাবকরা জানান, স্কুলে শুধু ঘরই নয়, নেই পানীয় জল বা শৌচাগারের ব্যবস্থাও। অভিভাবিকা চিনু বিশ্বাস বলেন, “ভবিষ্যতের কথা ভেবেও আমরা ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাচ্ছি। কিন্তু বিডিও সাহেব প্রতিশ্রুতি দিলেও কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।”
জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক শ্যামল চন্দ্র রায় জানান, তারা এই সমস্যার কথা জানেন, কিন্তু মূল সমস্যা হলো জমি। কেউ যদি স্কুলের জন্য জমি দেন, তবেই নতুন ভবন তৈরি করা সম্ভব হবে।
তবে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য জিতেনচন্দ্র বিশ্বাস জানান, যেখানে বর্তমানে ক্লাস চলছে, সেখানে এক বিঘার বেশি জমি আছে এবং জমির মালিক স্কুলকে জায়গা দিতে রাজিও হয়েছেন। সেই জমির পাট্টার কাগজ প্রধান শিক্ষক এবং এসআইকে দেওয়া হয়েছে। তারপরেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।