ডিটেনশন ক্যাম্প’ নিয়ে তোলপাড় বাংলা, মমতাকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ বিজেপির, কী বলছেন বিরোধীরা

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ‘ডিটেনশন সেন্টার’ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়ে বাংলায় নতুন করে রাজনৈতিক উত্তেজনা শুরু হয়েছে। এই কেন্দ্রগুলোতে অবৈধভাবে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকদের রাখা হবে। কেন্দ্রের এই নির্দেশকে ঘিরে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে চলছে তীব্র চাপানউতোর।
তৃণমূলের অভিযোগ: হিটলারের সঙ্গে তুলনা
তৃণমূল নেতা অরূপ চক্রবর্তী কেন্দ্রের এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “এটি জার্মানির হিটলারের জমানার প্রতিফলন।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, প্রথমে ‘ডি-ভোটার’ করে, তারপর নাগরিকত্ব বাতিল করে এবং শেষে ‘কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে’ মানুষকে রাখা হবে। তবে তিনি হুঙ্কার দিয়ে বলেন, “যতদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার থাকবে, ততদিন বাংলার কোনো মানুষকে জোর করে কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে পাঠানো যাবে না।”
বিজেপির পাল্টা জবাব: তৃণমূলের ঘরেই ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’
তৃণমূলের এই আক্রমণের জবাবে বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন। তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ সম্প্রতি যেসব বাংলাদেশি নাগরিককে ধরেছে, তাদের কি ফিরহাদ হাকিম বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে রাখা হয়েছে? তাদের তো জেলেই রাখা হয়েছে। আর ওই জেলই তো ডিটেনশন ক্যাম্প।” তিনি আরও বলেন, ডিটেনশন ক্যাম্প মানে নতুন করে কোনো কারাগার তৈরি করা নয়।
বিরোধীদের চোখে ‘রাজনৈতিক খেলা’
এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল ও বিজেপিকে একযোগে আক্রমণ করেছেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তিনি এটিকে দুই দলেরই ‘মিউচুয়াল গেম’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলবেন, আমার রাজ্যে ডিটেনশন ক্যাম্প হবে না।” অধীর চৌধুরীর মতে, সিএএ, এনআরসি-র মতো এটিও বিভাজনের রাজনীতি।
অন্যদিকে, সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানোর জন্যই এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।” তিনি অভিযোগ করেন, মানুষের পরিচয় ও অধিকার বাতিল করার চেষ্টা চলছে।
তবে, ইসকনের সহ-সভাপতি রাধারমণ দাস কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, যেন কোনো ভারতীয় নাগরিককে ভুল করে এই ক্যাম্পে রাখা না হয়।