শিনা বোরা হত্যা মামলায় নয়া মোড়, মায়ের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য ‘জাল’, কোর্টে বিস্ফোরক দাবি মেয়ের

চাঞ্চল্যকর শিনা বোরা হত্যা মামলায় এবার নতুন মোড়। এতদিন মামলার অন্যতম সাক্ষী হিসাবে পরিচিত ছিলেন শিনার সৎ বোন বিধি মুখোপাধ্যায়। কিন্তু তিনি এবার আদালতে দাঁড়িয়ে যা দাবি করলেন, তা রীতিমতো চমকে দেওয়ার মতো। বিধি জানিয়েছেন, সিবিআই-এর কাছে তিনি কোনো বয়ান রেকর্ড করেননি, এবং চার্জশিটে তার নামে যা জমা দেওয়া হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও জাল।

দীর্ঘদিন ধরে চলা এই মামলায়, বিধির এই অপ্রত্যাশিত বয়ান আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। তার এই দাবি মামলার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।

বিধির বিস্ফোরক দাবি:

মিথ্যা বয়ান ও প্রতারণার অভিযোগ: বিধি জানান, সিবিআই বা পুলিশের কাছে তিনি কোনো বয়ান রেকর্ড করেননি। তার মতে, তার মা ইন্দ্রাণী ও বাবা সঞ্জীব খান্নাকে ফাঁসানোর জন্য কেউ এই কাজ করেছে। তাকে দিয়ে একাধিক সাদা কাগজ এবং নথিতে সই করিয়ে নেওয়া হয়েছিল বলে তার অভিযোগ।

সম্পর্ক অবনতির কারণ: শিনা-ইন্দ্রাণীর সম্পর্ক প্রসঙ্গে বিধি বলেন, তাদের সম্পর্ক প্রথম দিকে ভালোই ছিল। কিন্তু পিটার মুখোপাধ্যায়ের ছেলে রাহুল যখন তাদের ওরলি ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করে, তখন থেকে সম্পর্কে অবনতি হয়। রাহুলের মাদক সেবনের অভ্যাস এবং শিনাকেও সেই পথে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা পরিবারে অশান্তির জন্ম দেয়।

পরিবারের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ: আদালতে বিধি আরও জানান যে, ইন্দ্রাণী এখন সম্পূর্ণ নিঃস্ব। তার অভিযোগ, পিটার মুখোপাধ্যায়ের দুই ছেলে রাহুল ও রবিন ইন্দ্রাণীর কোটি টাকার পৈতৃক গহনা ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ৭ কোটি টাকা চুরি করে নিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে ইন্দ্রাণীকে ফাঁসানোর চেষ্টারও অভিযোগ করেন বিধি।

যেভাবে সামনে এসেছিল হত্যাকাণ্ড:

২০১২ সালে শিনা বোরাকে তার মা ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়, সৎ বাবা সঞ্জীব খান্না এবং গাড়ির চালক শ্যাম রাই মিলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর দেহটি একটি স্যুটকেসে ভরে মহারাষ্ট্রের রায়গড় জেলার জঙ্গলে পুড়িয়ে ফেলা হয়।

২০১৫ সালে শ্যাম রাই অন্য একটি অস্ত্র মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কথা ফাঁস করে দেয়। এরপরই ইন্দ্রাণী, সঞ্জীব খান্না এবং পিটার মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনা সেই সময়ে গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল।

শিনা জীবিত আছেন, এই বিশ্বাস তৈরি করার জন্য ইন্দ্রাণী তার ইমেল থেকে বিভিন্ন মানুষকে বার্তা পাঠাতেন বলেও অভিযোগ ওঠে। এখন বিধির এই নতুন বয়ান মামলার গতিপথ কোন দিকে নিয়ে যায়, সেটাই দেখার বিষয়।