“৭৫০-এর বেশি স্কুল বন্ধ”-‘ঈশ্বরের দেশ’ গ্রিসে স্কুল কেন বন্ধ হচ্ছে? কারণ শুনলে চমকে যাবেন!

বন্যা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য নয়, শুধুমাত্র তীব্র জনসংখ্যা সংকটের কারণে ৭৫০টিরও বেশি স্কুল বন্ধ করে দিল গ্রিস সরকার! ‘ঈশ্বরের দেশ’ বলে পরিচিত গ্রিসে জন্মহার এতটাই কমে গিয়েছে যে তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর। শিক্ষাবর্ষ শুরুর আগেই সরকার এই কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। এই স্কুলগুলো গ্রিসের মোট স্কুলের প্রায় পাঁচ শতাংশ।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত সাত বছরে গ্রিসে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১.১১ লক্ষেরও বেশি কমেছে, যা ২০১৮ সালের তুলনায় ১৯ শতাংশ কম। শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, একটি স্কুল চালু রাখার জন্য ন্যূনতম ১৫ জন শিক্ষার্থী থাকতে হয়। কিন্তু শিক্ষার্থী না থাকায় ১৪,৮৫৭টি স্কুলের মধ্যে ৭৬৬টি স্কুলই এই শর্ত পূরণ করতে পারেনি। এর ফলে প্রাথমিক স্তরের বেশিরভাগ স্কুলই বন্ধ হয়েছে, এখন মাধ্যমিক স্তরেও এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।

কেন গ্রিসে এই ভয়াবহ সংকট?
২০১০ সাল থেকেই গ্রিসে জনসংখ্যা হ্রাস শুরু হয়। ২০১১ সাল থেকে দেশটিতে জন্মহারের চেয়ে মৃত্যুহার বেশি। ২০০১ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে, ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সী মহিলাদের সংখ্যা প্রায় পাঁচ লক্ষ (৩১ শতাংশ) কমেছে। এই বয়সের মহিলাদেরই সন্তান ধারণের প্রধান বয়স হিসাবে ধরা হয়। একইসঙ্গে, অর্থনৈতিক সংকটের সময় বহু শিক্ষিত গ্রিক নাগরিক উন্নত জীবনের সন্ধানে বিদেশে পাড়ি জমান, যা দেশের সম্ভাব্য পিতামাতার সংখ্যা আরও কমিয়ে দিয়েছে।

জন্মহার নেমে এসেছে সর্বনিম্ন পর্যায়ে
ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী, গ্রিসে মহিলারা এখন গড়ে ৩২ বছর বয়সের পরেই প্রথম সন্তানের জন্ম দিচ্ছেন। জন্মহার বর্তমানে ১.৩৫-এ নেমে এসেছে, যা ইউরোপের মধ্যে সর্বনিম্ন। ২০২২ সালে যেখানে ৮০,০০০ এর কম শিশু জন্ম নিয়েছে, সেখানে ২০২৩ সালে মৃত্যুর সংখ্যা এর প্রায় দ্বিগুণ ছিল। বিয়ে ছাড়া সন্তান জন্ম দেওয়ার প্রবণতাও এই দেশে খুবই বিরল।