মোদীর সময় কত হাজার কোটি কালো ধন উদ্ধার বিদেশ থেকে? জবাব RTI’এর

২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদীর একটি প্রতিশ্রুতি ছিল অত্যন্ত জনপ্রিয়— বিদেশের কালো টাকা ফিরিয়ে এনে প্রতিটি ভারতীয়র ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। এক দশক পর, সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তব রূপ কী, তা নিয়ে সরকারি তথ্য সামনে এসেছে।

প্রতিশ্রুতি বনাম বাস্তবতা: আসল অঙ্কটা কী?
কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৫ সালে কার্যকর হওয়া ব্ল্যাক মানি অ্যাক্টের অধীনে এখনো পর্যন্ত প্রায় ৩৫,১০৪ কোটি টাকা কর দাবি করা হয়েছে। তবে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত মাত্র ৩৩৮ কোটি টাকা সরকারের হাতে এসেছে। এর পাশাপাশি, ২০১৫ সালে আরও ২,৪৭৬ কোটি কালো টাকা উদ্ধার করা হয়।

নোটবন্দির পর কী হয়েছিল?
২০১৬ সালের নভেম্বরে সরকার ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিল করে কালো টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করেছিল। সেই সময় অনেকেই মনে করেছিলেন, নোটবন্দির ফলে কালো টাকার পাহাড় বেরিয়ে আসবে। কিন্তু রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্টে দেখা যায়, প্রায় ৯৯% বাতিল নোটই ব্যাঙ্কে ফিরে এসেছিল, যা প্রমাণ করে এই পদক্ষেপ কালো টাকা উদ্ধারে কার্যকর ছিল না।

বিদেশ থেকে কত টাকা ফেরত এল?
তথ্য অধিকার আইনে (RTI) অর্থ মন্ত্রকের কাছে এক প্রশ্নের জবাবে জানানো হয়েছে যে, এখনো পর্যন্ত বিদেশ থেকে মোট ৪২,০৮৩ কোটি টাকা ভারতে ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে। এই অঙ্ক যদি দেশের ১৪০ কোটি মানুষের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়, তাহলে প্রত্যেকের ভাগে পড়বে মাত্র ৩০০ টাকা।

অর্থনীতিবিদদের মত
যদিও এই টাকা উদ্ধার নিয়ে সরকার বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়ছে, বেশ কিছু অর্থনীতিবিদ মনে করেন, এই কালো টাকা কোনো নির্দিষ্ট সরকারের আমলের নয়। স্বাধীনতার আগে থেকেই ভারতের দুর্বল কর ব্যবস্থা এবং কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা এই সমস্যার মূল কারণ। তবে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি আর বাস্তবতার মধ্যে যে আকাশপাতাল ফারাক, তা এই পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট।