রেল মানচিত্রে মিজোরামের আইজল, যোগাযোগে নতুন দিগন্ত

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতির অধীনে উত্তর-পূর্ব ভারতের উন্নয়নে আরও একটি বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এবার মিজোরামের রাজধানী আইজল দেশের রেল মানচিত্রে যুক্ত হতে চলেছে। এর ফলে মিজোরাম চতুর্থ উত্তর-পূর্ব রাজ্য হিসেবে রেল সংযোগ পাবে।

প্রকল্পের গুরুত্ব

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রেল প্রকল্পটি অর্থনৈতিকভাবে আইজলকে আরও শক্তিশালী করবে এবং পর্যটনকে উৎসাহিত করবে। সামরিক দিক থেকেও এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর সাহায্যে মায়ানমার সীমান্তে সহজে এবং দ্রুত রসদ পৌঁছে দেওয়া যাবে। এতদিন অসমের শিলচর থেকে মিজোরামের বৈরবী পর্যন্ত ট্রেন চলত। বৈরবী থেকে আইজল পৌঁছাতে সড়কপথে প্রায় ১০-১২ ঘণ্টা লাগত, যা এখন রেলপথে মাত্র ৩০-৪০ মিনিটে সম্ভব হবে।

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান

বৈরবী থেকে আইজলের সাইরাং পর্যন্ত ৫১.৩৮ কিলোমিটার রেল প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। ১৯৯৯ সালে এই প্রকল্পের পরিকল্পনা শুরু হয়েছিল এবং প্রায় ২৬ বছর ধরে কাজ চলেছে। ৫ হাজার ২১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে তৈরি এই প্রকল্পটি ১৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে উদ্বোধন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

দুর্গম পাহাড় কেটে এবং নানা বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে এই রেলপথ তৈরি করা হয়েছে। এখানে মোট ৪৮টি টানেল এবং ৫৫টি বড় রেল সেতু রয়েছে। এর মধ্যে একটি ব্রিজের পিলার দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, যার উচ্চতা ১১৪ মিটার, যা কুতুব মিনারের থেকেও ৪২ মিটার উঁচু।

যোগাযোগ ও বাণিজ্যে বড় পরিবর্তন

এই প্রকল্প সম্পূর্ণ হওয়ায় মিজোরামের মানুষের জন্য যোগাযোগ এবং বাণিজ্যে একটি বড় পরিবর্তন আসবে। এতদিন ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে শিলচর থেকে পণ্য আইজল পৌঁছাতে দেড় থেকে দু’দিন লাগত, যা এখন মাত্র ৩৫ মিনিটে সম্ভব হবে। এই সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব রেল পরিষেবা রাজ্যের সামগ্রিক উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বৈরবী থেকে আইজলের মধ্যে মোট চারটি নতুন স্টেশন তৈরি করা হয়েছে: হর্তকি, কাওনপুই, মুয়ালখং এবং সাইরাং।