চীন এখন আর শুধু সিনেমায় মার্শাল আর্ট দেখায় না, বলিউড থেকে তাদের পার্থক্য কোথায়?

বিশ্বজুড়ে সিনেমার ধারা এখন বদলাচ্ছে। এতদিন হলিউড পুরো বিশ্বকে নেতৃত্ব দিলেও, এখন চীন এবং ভারতও তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি আর কৌশলের ওপর ভিত্তি করে নতুনভাবে উঠে আসছে।

একটা সময় ছিল যখন চীনা সিনেমা মানেই মার্শাল আর্ট। কিন্তু এখন সেই ধারণা বদলেছে। চীন এখন রোমান্স, আবেগ, ইতিহাস এবং লোককাহিনীর মতো বিষয়গুলো দিয়ে ছবি বানাচ্ছে। এর ফলে চীনা নাগরিকদের পাশাপাশি সারা বিশ্বের দর্শকদেরও আকর্ষণ করছে তারা।

  • সরকারি সমর্থন: চীনা সরকার দেশীয় চলচ্চিত্র শিল্পকে দারুণভাবে সমর্থন করে। যারা চীনা সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং জাতীয়তাবাদী বিষয় নিয়ে ছবি তৈরি করেন, তাদের জন্য বিশেষ সুবিধা ও প্রণোদনা দেওয়া হয়। এর ফলে আরও বেশি ছবি তৈরি হচ্ছে।
  • সফলতার উদাহরণ: ২০২৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘নে ঝা ২’ ছবিটি বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ছবিটি বিশ্বব্যাপী ২.১ বিলিয়ন ডলার আয় করে হলিউডের অনেক জনপ্রিয় ছবিকে পেছনে ফেলেছে। বিশ্বের সর্বোচ্চ আয় করা ১০০টি ছবির তালিকায় এখন তিনটি চীনা ছবি রয়েছে।
  • ‘চায়নাউড’ এর উত্থান: চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং চান একটি নতুন বিশ্বমানের সিনেমা সংস্কৃতি তৈরি করতে। এই শিল্পকে ‘চায়নাউড’ নামেও ডাকা হয়। এর মাধ্যমে চীন ব্যবসা বাড়ানোর পাশাপাশি তাদের জাতীয়তাবাদী চিন্তাভাবনাও সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিচ্ছে।

ভারত ও হলিউডের সঙ্গে তুলনা

আমেরিকার হলিউড লাভ এবং মুক্তবাজারের নীতির উপর ভিত্তি করে ছবি তৈরি করে। তাদের মূল লক্ষ্য হলো বিশ্বব্যাপী দর্শককে আকর্ষণ করা। অন্যদিকে, ভারতের বলিউডকেও সেন্সরশিপের কিছু নিয়ম মানতে হয়, কিন্তু পরিচালকরা বিষয়বস্তু নির্বাচনের ক্ষেত্রে অনেকটাই স্বাধীনতা পান।

তবে, চীনের সিনেমার ওপর সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। বিদেশি ছবিকেও সেখানে সেন্সরশিপের মধ্য দিয়ে যেতে হয়।

তবুও, বক্স অফিসের আয়ে চীন এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম চলচ্চিত্র বাজার। বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে চীনের সিনেমা শিল্পের আয় ২৪.৬৬ বিলিয়ন ডলার হতে পারে। যদিও হলিউড এখনো বার্ষিক ৬৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি আয় করে অনেক এগিয়ে আছে, যেভাবে চীন তাদের শিল্পকে শক্তিশালী করছে, তাতে মনে হচ্ছে অদূর ভবিষ্যতে তারা হলিউডের কাছাকাছি চলে আসবে।