ভারতীয় সংস্থা ‘এডুকেট গার্লস’ পেল র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার, গর্বিত গোটা দেশ! কি এই পুরস্কার?

গ্রামীণ মেয়েদের শিক্ষায় কাজ করে এমন ভারতীয় অলাভজনক সংস্থা ‘এডুকেট গার্লস’ এবার এশিয়ার অন্যতম সম্মানজনক র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার পেয়েছে। এই পুরস্কার প্রাপ্ত প্রথম ভারতীয় সংস্থা হিসেবে তারা ইতিহাস তৈরি করেছে। এই স্বীকৃতিতে তারা বিনোবা ভাবে, সত্যজিৎ রায়, কিরণ বেদী এবং এমএস সুব্বুলক্ষ্মীর মতো সম্মানীয় ভারতীয়দের সঙ্গে একই সারিতে জায়গা করে নিয়েছে।
এডুকেট গার্লস এর কাজ
‘এডুকেট গার্লস’ সংস্থাটি প্রত্যন্ত গ্রামের যেসব মেয়েরা স্কুলে যায় না, তাদের শিক্ষার ব্যবস্থা করে। সাফিনা হুসেন নামে একজন সমাজকর্মী এটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স থেকে পড়াশোনা করেছেন। এই সংস্থাটির রয়েছে ৫৫ হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবক। তাদের সাহায্যে দেশের প্রায় ৩০ হাজার গ্রামে কাজ করে এই সংস্থা। এ পর্যন্ত তারা ২০ লাখের বেশি মেয়েকে আবার স্কুলে ফিরিয়ে এনেছে। এর পাশাপাশি, ২৪ লাখেরও বেশি শিশুর জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা করেছে।
সাফিনা হুসেন বলেছেন, এই পুরস্কার শুধু এডুকেট গার্লসের জন্য নয়, বরং ভারতের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। তিনি বলেন, এই সম্মান মেয়েদের শিক্ষার জন্য ভারতের একটি জন-আন্দোলনকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছে, যা একটি গ্রামের মেয়েকে দিয়ে শুরু হয়েছিল এবং পরে পুরো সমাজের চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করেছে।
র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার কী?
১৯৫৮ সালে চালু হওয়া এই পুরস্কারটি এশিয়ার নোবেল পুরস্কার হিসেবে পরিচিত। এটি ফিলিপাইনের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি র্যামন ম্যাগসেসের নামে দেওয়া হয়। এই পুরস্কারটি এশিয়ার অসামান্য নেতৃত্ব এবং সম্প্রদায়ের প্রতি অবদানের জন্য দেওয়া হয়ে থাকে। প্রতি বছর ৩১শে আগস্ট তার জন্মবার্ষিকীতে এই পুরস্কারের ঘোষণা করা হয়। পুরস্কার হিসেবে বিজয়ীদের একটি সার্টিফিকেট ও একটি পদক দেওয়া হয়।
অন্যান্য বিজয়ী এবং উল্লেখযোগ্য ভারতীয় প্রাপক
এ বছর মালদ্বীপের শাহিনা আলীকে সামুদ্রিক প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধের কাজের জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ফিলিপাইনের ফাদার ফ্ল্যাভিয়ানো ভিলানুয়েভাকে ম্যানিলা শহরের গৃহহীন মানুষদের জন্য তার অবদানের জন্য সম্মানিত করা হয়েছে।
এছাড়াও, অনেক ভারতীয় এই পুরস্কার পেয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন হলেন:
ডঃ আর. রবি কান্নান (২০২৩): ক্যান্সারের চিকিৎসার খরচ কমানোর জন্য।
রবীশ কুমার (২০১৯): সাংবাদিকতার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কথা তুলে ধরার জন্য।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল (২০০৬): তথ্য অধিকার আন্দোলন শুরু করার জন্য।
মাদার টেরেসা (১৯৬২): শান্তি ও মানবিক কাজের জন্য।
সত্যজিৎ রায় (১৯৬৭): চলচ্চিত্র জগতে বিশেষ অবদানের জন্য।