প্রধানমন্ত্রীর মণিপুর সফর, শান্তির বার্তা নাকি রাজনৈতিক চাল,

২০২৩ সালে জাতিগত সংঘাত শুরু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো মণিপুর সফরে যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে এই সফরটি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সফরকে অনেকেই মণিপুরের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের পর শান্তি ও উন্নয়নের বার্তা হিসেবে দেখছেন, আবার বিরোধীরা এটিকে একটি রাজনৈতিক চাল হিসেবে সমালোচনা করছেন।

সফরের প্রেক্ষাপট

গত বছরের ৩ মে থেকে মণিপুরে মেইতেই এবং কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এই সংঘর্ষে ২৫৮ জন মারা গেছেন এবং ৬০,০০০ মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। এই দীর্ঘ সংকট চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী মোদী মণিপুর সফর না করায় বিরোধী দলগুলো বারবার তার সমালোচনা করেছে। এখন এই সংকট কিছুটা শান্ত হওয়ার পর তার এই সফরের সিদ্ধান্তকে বিরোধীদের সমালোচনার জবাব হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সফরের মূল উদ্দেশ্য

প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের প্রধান উদ্দেশ্য হলো মণিপুরে শান্তি ও উন্নয়নের বার্তা দেওয়া। তিনি মিজোরাম এবং আসাম সফরের সময় ইম্ফল ও চুরাচান্দপুর জেলা পরিদর্শন করতে পারেন। সেখানে তিনি সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত বাস্তুহারা মানুষদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন এবং প্রায় ১০,০০০ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন করতে পারেন। এই প্রকল্পগুলো মণিপুরের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে সামাজিক সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করতে পারে।

বিরোধীদের সমালোচনা

কংগ্রেসের মতো বিরোধী দলগুলো এই সফরকে একটি রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে দেখছে। তাদের মতে, যখন মণিপুরের মানুষের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল, তখন প্রধানমন্ত্রী তাদের পাশে ছিলেন না। এখন আসন্ন নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে এই সফর করা হচ্ছে।

যদিও, বিজেপি সমর্থকরা বলছেন যে এই সফরটি প্রমাণ করে সরকার মণিপুরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে। তাদের মতে, প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিই পরিস্থিতিকে স্থিতিশীল করতে সাহায্য করবে।

মণিপুরের এই সংকট শুরু হয়েছিল মেইতেই সম্প্রদায়কে উপজাতি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার এক আদালতের নির্দেশের পর। সেই সিদ্ধান্তটি দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিবাদ আরও বাড়িয়ে দেয়।

সব মিলিয়ে, প্রধানমন্ত্রীর এই সফর মণিপুরের মানুষের মনে নতুন করে আশা জাগাচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, এই সফর কি শুধু রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধন করবে, নাকি এটি সত্যিই মণিপুরে শান্তি ও স্থায়িত্ব ফিরিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।