সেপ্টেম্বর মাসেও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, বাড়ছে বন্যার আশঙ্কা

দেশের উত্তর ও পশ্চিম ভারতে প্রবল বৃষ্টি এবং বন্যায় পরিস্থিতি ইতিমধ্যেই খারাপ। এই পরিস্থিতিতে আরও একটি দুঃসংবাদ দিল আবহাওয়া দপ্তর। মৌসম ভবন জানিয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসেও সারা দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হতে পারে। এর ফলে বন্যা ও ভূমিধসের আশঙ্কা আরও বাড়বে।

রবিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে আবহাওয়া দপ্তরের ডিরেক্টর জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানান, সেপ্টেম্বর মাসে গড় বৃষ্টিপাত প্রায় ১০৯ শতাংশ হবে। বেশিরভাগ অঞ্চলে স্বাভাবিক বা স্বাভাবিকের থেকে বেশি বৃষ্টি হবে। তবে উত্তর-পূর্ব, পূর্ব, এবং উত্তর-পশ্চিম ভারতের কিছু অংশে বৃষ্টি কম হতে পারে।

বন্যা ও ধসের সতর্কতা

মৌসম ভবন উত্তরাখণ্ডে আরও ভারী বৃষ্টি এবং ভূমিধসের সম্ভাবনা নিয়ে সতর্ক করেছে। এর ফলে ওই রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। এর সঙ্গে হরিয়ানা, দিল্লি ও উত্তর রাজস্থানেও জনজীবন স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

মহাপাত্র বলেন, “উত্তরাখণ্ড থেকে অনেক নদীর উৎপত্তি হয়েছে। তাই সেখানে ভারী বৃষ্টি হলে নদীর জল বেড়ে শহর ও গ্রামের অনেক এলাকা ডুবে যেতে পারে।” একইসাথে ছত্তিশগড় এবং মহানদীর অববাহিকা অঞ্চলেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি জানান।

আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, ১৯৪০ সাল থেকে দেখা যাচ্ছে যে, সেপ্টেম্বর মাসে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়ছে।

জুলাই ও আগস্টের রেকর্ড বৃষ্টি

মৌসম ভবনের তথ্য অনুযায়ী, এই বছর ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ভারতে ৭৪৩.১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৬ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে আগস্ট মাসেই উত্তর-পশ্চিম ভারতে ২৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে, যা ১৯০১ সালের পর থেকে ১৩তম সর্বোচ্চ।

এই অতিরিক্ত বৃষ্টির প্রধান কারণ হলো সক্রিয় মৌসুমী বায়ু এবং ঘন ঘন পশ্চিমা ঝঞ্ঝা। এর ফলে পাঞ্জাবে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়েছে এবং হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, এবং জম্মু-কাশ্মীরে ভূমিধস ও হড়পা বানের ঘটনা ঘটেছে, যার কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

আবহাওয়া দপ্তরের মতে, এই সব প্রাকৃতিক দুর্যোগের মূল কারণ হলো বঙ্গোপসাগর এবং আরব সাগর থেকে আসা জলীয় বাষ্পপূর্ণ বাতাস।