চলন্ত গাড়ি থামিয়ে করা হতো লজ্জাজনক কাজ, গ্রেফতা সিভিক ভলান্টিয়ার সহ ২

শহরের রাস্তায় দিনের পর দিন চলন্ত গাড়ি থেকে চা পাতা চুরি হচ্ছিল। অবশেষে এই ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে একজন সিভিক ভলান্টিয়ার। আরেকজন তার সহযোগী। সিনেমার মতো কায়দায় তারা এই চুরিগুলো চালাচ্ছিল।

শুক্রবার রাতে উত্তম বর্মন এবং বিশ্বজিৎ চৌধুরী নামে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উত্তম এনজেপি (New Jalpaiguri) থানায় সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করত। তারা দুজনেই বেলাকোবায় ভাড়া বাড়িতে থাকত।

পুলিশ জানিয়েছে, তারা এনজেপি থানার টি পার্ক এলাকা থেকে বের হওয়া চা পাতা ভর্তি ট্রাকগুলোকে টার্গেট করত। গত তিন সপ্তাহ ধরে অনেক ট্রাকচালক অভিযোগ করছিলেন যে তাদের গাড়ি থেকে চা পাতার ব্যাগ গায়েব হয়ে যাচ্ছে, অথচ কেউ কিছুই টের পাচ্ছিল না। এরপর একটি সংশ্লিষ্ট সংস্থা এনজেপি থানায় লিখিত অভিযোগ করলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চুরির সময় সিভিক ভলান্টিয়ার উত্তম তার ইউনিফর্ম খুলে বাইকে করে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকত। অন্যদিকে, বিশ্বজিৎ চলন্ত ট্রাকের পেছনে পেছনে দৌঁড়ে গিয়ে সুযোগ বুঝে ট্রাকে উঠে চা পাতার ব্যাগ নামিয়ে নিত। এরপর দ্রুত বাইকে করে তারা পালিয়ে যেত।

বিশ্বজিতের বিরুদ্ধে এনজেপি এবং শিলিগুড়ি থানায় আগেও চুরি এবং অন্যান্য অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। তাদের দুজনকে জলপাইগুড়ি আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং তিন দিনের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

তদন্তকারীরা জানতে চাইছেন, চুরি করা চা পাতাগুলো কোথায় বিক্রি করা হতো এবং এই চুরির চক্রে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা। একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দিনের বেলায় প্রকাশ্য রাস্তায় এভাবে চলন্ত গাড়ি থেকে জিনিস নামিয়ে নেওয়ার ঘটনা খুবই চিন্তার বিষয়। অভিযুক্তদের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে এবং যাদের কাছে তারা চুরি করা চা পাতা বিক্রি করত, তাদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। একজন সিভিক ভলান্টিয়ার কীভাবে তার দায়িত্বের আড়ালে দিনের পর দিন চুরি চালিয়ে যাচ্ছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এই ঘটনায় স্থানীয় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।