গত বছরের ৩.৫ কোটি টাকা বকেয়া, এবার পুজোয় প্যান্ডেল না-করার হুমকি ডেকরেটরদের

দুর্গাপূজার আর বেশি দিন বাকি নেই। সব জায়গায় যখন পুজোর প্রস্তুতি চলছে, তখন রায়গঞ্জের ডেকরেটররা হতাশায় ভুগছেন। কারণ, গত বছর বিভিন্ন ক্লাব ও সরকারি অনুষ্ঠানে প্যান্ডেল তৈরি করেও এখনও পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা বকেয়া রয়ে গেছে। তাই তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, টাকা না পেলে এ বছর দুর্গাপুজায় কোনো কাজ করবেন না। এমনকি বাইরে থেকে কোনো ডেকরেটর এলে তাঁদেরও কাজ করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।
বকেয়ার বোঝা
উত্তর দিনাজপুর ডেকরেটর অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, রায়গঞ্জে প্রায় ৩৩০টি পুজো কমিটি রয়েছে। এর মধ্যে ২০টি বড় বাজেটের পুজো হয়। প্রতি বছর এই পুজোতে জাঁকজমকপূর্ণ প্যান্ডেল তৈরি হয়। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে কাজ করার পর ঠিকমতো টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। এই বকেয়া টাকা এখন সাড়ে তিন কোটি টাকায় পৌঁছেছে। এই অবস্থায় অনেক ডেকরেটরের পক্ষেই পুজোর নতুন কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।
কী বলছেন ডেকরেটররা?
রায়গঞ্জের ডেকরেটর মনোজ সাহা বলেন, “আমাদের সারা বছরের রুজি-রোজগার এই পুজোর কাজের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু অনেক ক্লাব টাকা দিচ্ছে না। অনেক সময় দেখা যায়, যে ডেকরেটরের টাকা বাকি, পরের বছর তাঁকে কাজ না দিয়ে অন্য কাউকে দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়া হচ্ছে।”
প্যান্ডেল ব্যবসায়ী বিকাশ ঠাকুর জানান, তুলসীতলা, চণ্ডীতলা এবং বোগ্রাম এলাকার কয়েকটি পুজো কমিটির কাছে তাঁর লক্ষাধিক টাকা বকেয়া রয়েছে।
পূজা কমিটির বক্তব্য
রায়গঞ্জের একটি বড় পুজো কমিটির সম্পাদক নয়ন দাস স্বীকার করেছেন যে, সরকারি অনুদান ছাড়া চাঁদার পরিমাণ কমে যাওয়ায় অনেক কমিটিরই টাকা বকেয়া থেকে যাচ্ছে। তবে তিনি এও বলেছেন যে, ডেকরেটরদের এটাই প্রধান রোজগার। তাই তাঁদের টাকা বকেয়া রেখে অন্য কাউকে কাজ দেওয়া ঠিক নয়।
বর্তমানে বেশ কিছু পুজো কমিটি প্যান্ডেলের কাজ শুরু করে দিয়েছে। অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, তারা খুব তাড়াতাড়ি বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবে যে বকেয়া টাকা আদায় না হলে এই কাজগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে কিনা। এই অবস্থায় রায়গঞ্জের পুজো কমিটিগুলো এবং ডেকরেটরদের মধ্যে একটা চাপা উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।