৭০ লাখের ছবি, ৭৫ কোটির ইতিহাস—খরচের ১০০ গুণ আয় করে যে ভারতীয় সিনেমা?

সিনেমা হিট হওয়া মানেই সেটা সফল— দর্শক সাধারণত এমনটাই মনে করেন। বক্স অফিসের পরিভাষায় ‘হিট’, ‘সুপারহিট’, বা ‘ব্লকবাস্টার’-এর মতো শব্দগুলো খুব সহজেই ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এমন একটি সিনেমা কি হতে পারে, যা বাজেটের ১০০ গুণেরও বেশি আয় করেছে? এমন ঘটনা বিরল হলেও সত্যিই ঘটেছে। এটি হলো ২০০৬ সালের কন্নড় সিনেমা ‘মুংগারু মালে’-এর গল্প, যাকে ভারতের সবচেয়ে লাভজনক সিনেমা বলা হয়।
কম বাজেট, বড় তারকা
লেখক ও পরিচালক যোগরাজ ভাট মাত্র ৭০ লাখ টাকা বাজেটে এই রোমান্টিক ড্রামাটি তৈরি করেছিলেন। ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন নতুন মুখ গণেশ এবং পূজা গান্ধী। তাদের সঙ্গে ছিলেন অভিজ্ঞ অভিনেতা অনন্ত নাগ। ছবিটি এমন একটি সময়ে মুক্তি পায় যখন গণেশ এবং পূজা তুলনামূলকভাবে অপরিচিত ছিলেন।
রেকর্ড গড়া সাফল্য
২০০৬ সালের ডিসেম্বরে ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর ধীরে ধীরে এর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। বেঙ্গালুরুর একটি মাল্টিপ্লেক্সে এটি টানা ৪৬০ দিন চলেছিল, যা এক অসাধারণ রেকর্ড। এটিই প্রথম কন্নড় সিনেমা যা বিশ্বব্যাপী ৫০ কোটি টাকার বেশি আয় করে। এর মোট আয় ছিল ৭৫ কোটি টাকা, যার মধ্যে ৫৭ কোটি এসেছিল শুধু কর্ণাটক থেকেই। এই রাজ্যে ছবিটি ‘ইন্ডাস্ট্রি হিট’ হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
এই ছবির সাফল্য রাতারাতি গণেশ এবং পূজাকে তারকা বানিয়ে দেয়। এরপর তারা আরও অনেক হিট ছবিতে অভিনয় করেন এবং কন্নড় সিনেমার জনপ্রিয় মুখ হয়ে ওঠেন।
প্রযোজকের জন্য তিক্ত সাফল্য
তবে এই সাফল্য প্রযোজক ই কৃষ্ণর জন্য কিছুটা সমস্যাও তৈরি করে। আয়কর বিভাগ দাবি করে, ছবিটি থেকে নিট লাভ হয়েছে ৬৭.৫০ কোটি টাকা এবং সেই অনুযায়ী কর দিতে হবে। এমনকী আয়কর কর্মকর্তারা প্রযোজকের বাড়িতেও হানা দেন।
‘মুংগারু মালে’র বক্স অফিস রেকর্ড প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে টিকে ছিল, যা পরে ‘কেজিএফ চাপ্টার ১’ ভেঙে দেয়। ছবিটি পরবর্তীতে তেলুগু, বাংলা, ওড়িয়া এবং মারাঠি ভাষায় পুনরায় নির্মিত হয়। ২০১৬ সালে এর আত্মিক সিকুয়েল ‘মুংগারু মালে ২’ মুক্তি পায় এবং সম্প্রতি ছবিটি ওটিটি-তেও এসেছে।