শ্রমশ্রী প্রকল্পে প্রতি মাসে ৫,০০০ টাকা কীভাবে পাবেন? জেনেনিন সব তথ্য এক নজরে

রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকদের আর্থিক সুরক্ষা ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন এক বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্ন থেকে তিনি ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্পের সূচনা করলেন। এই প্রকল্পের অধীনে, যেসব শ্রমিক কর্মহীন হয়ে রাজ্যে ফিরে এসেছেন, তারা বিভিন্ন ধরনের সহায়তা পাবেন।
এই প্রকল্পের মূল সুবিধাগুলো হলো:
- মাসিক আর্থিক সহায়তা: কাজ না পাওয়া শ্রমিকরা প্রতি মাসে ৫,০০০ টাকা করে ভাতা পাবেন। এই ভাতা টানা ১২ মাস, অর্থাৎ এক বছর পর্যন্ত দেওয়া হবে, যতদিন না তারা নতুন কোনো কাজ খুঁজে পান।
- দক্ষতা বৃদ্ধি প্রশিক্ষণ: ‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পের মাধ্যমে শ্রমিকদের নতুন দক্ষতা শেখানো হবে, যা তাদের নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ দেবে।
- জব কার্ড: কর্মশ্রী প্রকল্পের আওতায় শ্রমিকদের জব কার্ড দেওয়া হবে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ২২ লক্ষ ৪০ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন।
কীভাবে আবেদন করবেন?
আবেদন প্রক্রিয়া সহজ করার জন্য একটি নতুন ‘শ্রমশ্রী’ পোর্টাল খোলা হবে। যেসব পরিযায়ী শ্রমিকের নাম আগে থেকেই পুরানো পোর্টালে নথিভুক্ত আছে, তারাও সেখানে আবেদন করার সুযোগ পাবেন। এছাড়া, স্থানীয়ভাবে ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির মাধ্যমেও শ্রমিকদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে, যেখানে বিডিওরা সরাসরি খোঁজ নেবেন। যেসব শ্রমিকের নাম এখনও নথিভুক্ত হয়নি, তারাও এই নতুন পোর্টালে নিজেদের নাম তুলতে পারবেন।
আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় নথি:
আবেদনের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি প্রয়োজন হবে, যার মধ্যে রয়েছে:
- আধার কার্ড বা ভোটার কার্ড
- শ্রমিক হিসেবে কাজ করার প্রমাণপত্র
- ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিবরণ
- পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার প্রমাণপত্র
কেন এই প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ?
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অনেক শ্রমিক কর্মসংস্থান না পেয়ে রাজ্যে ফিরে আসছেন। তাদের পুনর্বাসন ও আর্থিক সুরক্ষার জন্যই এই প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এর ফলে কাজ না থাকলেও শ্রমিকরা একটি ন্যূনতম ভাতা পাবেন এবং দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নতুন কাজের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে পারবেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কিছু দিনের মধ্যে যারা ফিরে এসেছেন, অত্যাচারিত হয়েছেন, ২ হাজার ৭০০ পরিবার। ১০ হাজারের বেশি লোককে আমরা নিয়ে এসেছি। অনেকে নিজেরা ফিরে আসছেন। শ্রমশ্রী পোর্টাল তৈরি হবে। তারা আই কার্ড পাবেন। ফিরে এসেছেন যারা, তারা ৫ হাজার টাকা করে পাবেন। তাদের সন্তানদের স্কুলে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা হবে।”
একই সঙ্গে, মুখ্যমন্ত্রী শ্রমিকদের সতর্ক করে বলেন যে কিছু সংস্থা ‘মেন্টাল হেলথ’ বা অন্য নামে রাজ্যে রাজনৈতিক স্বার্থে সার্ভে চালাচ্ছে। তিনি শ্রমিকদের ব্যক্তিগত তথ্য কারো সঙ্গে শেয়ার না করার জন্য সজাগ থাকার নির্দেশ দেন।