ট্রাম্প এবং পুতিনের বৈঠকে কী অর্জন হলো? জেনেনিন কি বলছে বিশেষজ্ঞরা ?

কোনো সুনির্দিষ্ট চুক্তি ছাড়াই শেষ হলো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যকার বহুল প্রতীক্ষিত বৈঠক। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার অ্যাঙ্কোরেজের একটি সামরিক ঘাঁটিতে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলা এই বৈঠকে ইউক্রেন সংকটই ছিল মূল আলোচনার বিষয়। যদিও কোনো তাৎক্ষণিক সমাধান আসেনি, দুই নেতাই বৈঠকটিকে ইতিবাচক হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং ভবিষ্যতে আলোচনার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে, তবে তারা এখনো কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেননি। তিনি বিশ্বাস করেন, পরবর্তীতে এই বিষয়ে অগ্রগতি অর্জনের ভালো সুযোগ রয়েছে। অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট পুতিনও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ হোক, এমন আন্তরিক আকাঙ্ক্ষার কথা জানান। তবে তিনি বলেন, যুদ্ধ পুরোপুরি বন্ধ করার জন্য সংকটের মূল কারণগুলো সমাধান করা জরুরি। যদিও তিনি সেই কারণগুলোর বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি।
সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্ন না নিয়েই দুই নেতা চলে যান। পরে ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বৈঠককে ‘১০-এ ১০’ রেটিং দেন এবং বলেন, এটি ছিল একটি চমৎকার বৈঠক। অন্যদিকে, ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভও বৈঠককে ‘অত্যন্ত ইতিবাচক’ বলে মন্তব্য করেছেন।
বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। ট্রাম্প জানান, তিনি পুতিনের সঙ্গে আলোচনার পর জেলেনস্কি এবং ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলবেন। ফক্স নিউজকে তিনি আরও বলেন যে, জেলেনস্কি এবং পুতিন একটি যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনার জন্য একটি বৈঠকের আয়োজন করতে চান এবং তিনি চাইলে সেই পরবর্তী বৈঠকে উপস্থিত থাকতে রাজি আছেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুতিন দুই দেশের ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথা তুলে ধরে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া ভৌগোলিকভাবে দূরে হলেও, আলাস্কার দিক থেকে তারা মাত্র চার কিলোমিটারের দূরত্বে অবস্থিত, যা তাদের ‘খুব কাছের প্রতিবেশী’ করে তোলে। তিনি জানান, এই বাস্তবতার ওপর ভিত্তি করে ট্রাম্প তাকে ‘হ্যালো, প্রতিবেশী’ বলে সম্বোধন করেছেন। পুতিন আরও বলেন, একসময় আলাস্কা রাশিয়ার অংশ ছিল এবং সেখানে এখনো রাশিয়ান অর্থোডক্স চার্চের উপস্থিতি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক পুনর্গঠনে সহায়ক হতে পারে।
যদিও এই বৈঠক থেকে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোনো বড় ধরনের অর্জন দেখা যায়নি, দুই নেতার মন্তব্য এবং তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও আলোচনার পথ খুলে দিয়েছে। পুতিন ইঙ্গিত দিয়েছেন যে পরবর্তী বৈঠক মস্কোয় হতে পারে।