পুজোর সামগ্রী বিক্রির আড়ালে বোমা মশলার ব্যবসা, গ্রেপ্তার হলেন তৃণমূল নেতা

পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরের অর্জুন নগরে বোমা তৈরির মশলা সহ এক তৃণমূল কংগ্রেস নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃত সুবীর মাইতির নাম ২০২২ সালের নাড়ুয়াবিলা বোমা বিস্ফোরণ কাণ্ডে জড়িয়েছিল, এবং সেই সূত্র ধরেই তাকে আটক করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

নাড়ুয়াবিলা বিস্ফোরণ কাণ্ডে এনআইএ তদন্তে একাধিক তৃণমূল নেতার নাম উঠে আসে। ৩ ডিসেম্বর, ২০২২ তারিখে ভগবানপুর বিধানসভা কেন্দ্রের নাড়ুয়াবিলা গ্রামে একটি বিস্ফোরণে তিনজন নিহত হন, যার মধ্যে একজন ছিলেন তৃণমূল কর্মী। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) এই ঘটনার তদন্তভার গ্রহণ করে। সূত্র মারফত জানা গেছে, এনআইএর তদন্তে অর্জুন নগরের বাসিন্দা সুবীর মাইতির নামও উঠে আসে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, সুবীর মাইতি অর্জুন নগরের কমনানবাড় এলাকায় একটি দশকর্মার দোকান চালাতেন। অভিযোগ উঠেছে, এই দোকানের আড়ালেই তিনি বোমা তৈরির মশলার কারবার চালাতেন। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ভূপতিনগর থানার পুলিশ শুক্রবার হানা দিয়ে প্রায় ৬০ কেজি বোমা তৈরির মশলা উদ্ধার করে এবং সুবীর মাইতিকে গ্রেপ্তার করে।

এই গ্রেপ্তারিকে কেন্দ্র করে এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। ভগবানপুরের তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি অভিযোগ করেছেন, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলকে কালিমালিপ্ত করার জন্য এই পুরনো বোমা কাণ্ডকে সামনে আনা হচ্ছে এবং বিজেপি ঘর গোছাচ্ছে। তিনি আরও দাবি করেন, বিরোধীরা সুবীর মাইতিকে ছাড়ানোর জন্য থানায় চাপ সৃষ্টি করছে। যদিও তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলার মুখপাত্র অপরেশ সাঁতরা এই বিষয়ে অবগত নন বলে জানিয়েছেন এবং খোঁজ নিয়ে মন্তব্য করবেন বলেছেন।

তবে পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া মশলা বোমা তৈরির নয়, বরং রং মশাল এবং বাজি তৈরির সরঞ্জাম। ভূপতিনগর থানার এক আধিকারিকের দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে নাড়ুয়াবিলা বিস্ফোরণ কাণ্ডের কোনো সরাসরি যোগ নেই। শনিবার ধৃত তৃণমূল নেতা সুবীর মাইতিকে কাঁথি আদালতে তোলা হবে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং উদ্ধার হওয়া সরঞ্জাম পরীক্ষা করে দেখছে।