গড়গড় করে ইংরেজি বলে ট্রাম্পকে চমকে দিলেন পুতিন, কী আলোচনা হলো দুজনের?

আলাস্কায় বহু প্রতীক্ষিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠক শেষ হলেও ইউক্রেন সংকটের সমাধান নিয়ে কোনো সুস্পষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি। তবে দুই নেতার মধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এবং তারা একটি বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে সময় কাটিয়েছেন। দুই নেতার শরীরী ভাষা দেখে মনে হয়েছে, তাদের মধ্যে বেশ হালকা মেজাজেই কথাবার্তা হয়েছে।

বৈঠকের পর দুই প্রেসিডেন্ট একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন, যেখানে তারা সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি হননি। তবে সংবাদ সম্মেলনে তাদের কথোপকথনের কিছু অংশ দ্রুতই বিশ্বজুড়ে ভাইরাল হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনের একেবারে শেষ মুহূর্তে একটি মজার ঘটনা ঘটে, যা সকলের নজর কেড়েছে। ট্রাম্প পুতিনকে বলেন, “আমরা আবার খুব শীঘ্রই দেখা করব।” এর উত্তরে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন সাবলীল ইংরেজিতে বলেন, “নেক্সট টাইম ইন মস্কো,” অর্থাৎ পরের বার মস্কোতে দেখা হবে। পুতিনের এই অপ্রত্যাশিত ইংরেজি শুনে ট্রাম্প হেসে বলেন, “ওহ দ্যাটস অ্যান ইন্টারেস্টিং ওয়ান।” সাংবাদিকদের ক্যামেরায় এই মুহূর্তটি ধরা পড়ে এবং মুহূর্তেই তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

পুতিনের বক্তব্য:
সংবাদ সম্মেলনে পুতিন বলেন, আলাস্কা রাশিয়া এবং আমেরিকার ইতিহাসের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত, কারণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে এই দুই দেশ একসঙ্গে লড়াই করেছিল। তিনি আরও বলেন, তারা প্রতিবেশী। তবে তিনি স্বীকার করেন, সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের সম্পর্ক খারাপ হয়েছে। পুতিন এই বৈঠককে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, ইউক্রেন সমস্যা তাদের আলোচনার প্রধান বিষয় ছিল। ট্রাম্পের সমাধানের আগ্রহের প্রশংসা করে পুতিন বলেন, সংঘর্ষের আসল কারণ জানতে ট্রাম্প আগ্রহী। তিনি আশা করেন, ইউক্রেনে শান্তির পথ প্রশস্ত হবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।

ট্রাম্পের মন্তব্য:
ট্রাম্প জানান, তিনি খুব শীঘ্রই ন্যাটো এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলবেন। পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে অনেক বিষয়েই তারা একমত হয়েছেন বলে ট্রাম্প উল্লেখ করেন, তবে কোনো চুক্তি হয়েছে কিনা তা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। ট্রাম্পের ইঙ্গিত, পুতিন আর কোনো মৃত্যুমিছিল দেখতে চান না এবং খুব শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হবে। ট্রাম্প আরও ইঙ্গিত দেন, পুতিনের সঙ্গে তার খুব শীঘ্রই আবার সাক্ষাৎ হতে পারে।

দুই নেতার আলোচনায় এটা স্পষ্ট হয়েছে যে তারা উভয়েই ইউক্রেন ইস্যুতে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন এবং এই সমস্যা সমাধানে আরও একবার আলোচনায় বসতে আগ্রহী। পুতিন এমনও বলেন, যদি ২০২২ সালে ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হতেন, তাহলে হয়তো ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুই হতো না। এই মন্তব্য দুই নেতার পারস্পরিক বোঝাপড়ার একটি ইঙ্গিত বহন করে।