যাদবপুর-কাণ্ডে ধৃত প্রাক্তন পড়ুয়াকে জঙ্গি আফতাব আনসারির সঙ্গে তুলনা

পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে হেনস্থা ও তাঁর গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন পড়ুয়া হিন্দোল মজুমদারকে গ্রেপ্তার করেছে কলকাতা পুলিশ। এই গ্রেপ্তারি এবং পুলিশের দেওয়া যুক্তি নিয়ে এখন নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। পুলিশ হিন্দোলকে জঙ্গি আফতাব আনসারির সঙ্গে তুলনা করেছে, যা মামলাটিকে এক ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে।

হোয়াটসঅ্যাপে উস্কানি ও বিদেশ থেকে ষড়যন্ত্র
গত মার্চে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ঘটনাটি ঘটেছিল। পুলিশ জানিয়েছে, হিন্দোল ঘটনার সময় স্পেনে ছিলেন এবং সেখান থেকেই হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে যাদবপুরের বর্তমান পড়ুয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন। তিনি পুরো ঘটনার নকশা তৈরি করে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। এই অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে লুক-আউট নোটিশ জারি করা হয়। স্পেন থেকে দিল্লি বিমানবন্দরে নামতেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পরে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়।

আলিপুর আদালতে পুলিশ এই যুক্তি দিয়েছিল যে, যেভাবে আফতাব আনসারি দুবাই থেকে আমেরিকান সেন্টারে হামলার ছক কষেছিল, হিন্দোলও ঠিক সেভাবেই বিদেশ থেকে যাদবপুর-কাণ্ডের ষড়যন্ত্র করেছেন। পুলিশ বলেছে, “আফতাব যেমন নিজে কলকাতায় ছিল না, হিন্দোলও তেমনি স্পেনে থেকেই এই ঘটনা ঘটিয়েছেন।”

পরিবারের পাল্টা অভিযোগ, ‘হাস্যকর’ দাবি
হিন্দোলের বাবা পুলিশের এই অভিযোগকে ‘পুরোপুরি হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “যাদবপুরের পড়ুয়ারা মোটেও অপরিণত নন যে বিদেশ থেকে কেউ একটা কিছু করতে বললে তাঁরা করে দেবেন।” তিনি আরও দাবি করেছেন, তাঁর বাড়িতে কোনো সমন পাঠানো হয়নি এবং সেই পরিস্থিতিতে কোন যুক্তিতে লুক-আউট নোটিশ জারি করা হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

হিন্দোলের মাও তাঁর ছেলের পক্ষ নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তাঁর ছেলে এমন কী অপরাধী যে মুখ ঢেকে আদালতে আনতে হবে। তাঁর পরিবারের কোনো সদস্য কোনোদিন কোনো অনৈতিক কাজ করেননি বলেও তিনি জোর গলায় দাবি করেছেন। উল্লেখ্য, হিন্দোল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্মেসি নিয়ে বি-টেক করেছিলেন।

বিচারক এই মামলায় হিন্দোলকে আগামী সোমবার পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।