দিল্লিতে ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে জারি ‘লাল’ সর্তকতা, বৃষ্টিতে বিধ্বস্ত দেশের একাধিক রাজ্য

দেশের উত্তর থেকে দক্ষিণের একাধিক রাজ্যে গত কয়েক দিন ধরে চলা ভারী বৃষ্টিপাত জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে দিল্লি ও তার সংলগ্ন অঞ্চলে শুরু হওয়া প্রবল বৃষ্টিতে অনেক স্থানেই জল জমেছে, যার কারণে মৌসম ভবন হলুদ থেকে লাল সতর্কতা জারি করেছে। শুধু দিল্লি নয়, হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডেও ভারী বর্ষণের ফলে ভূমিধস এবং আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

দিল্লি-এনসিআর: জলমগ্ন রাস্তা, চরম ভোগান্তি

বৃহস্পতিবার সকালের প্রবল বৃষ্টিতে গাজিয়াবাদ, গুরুগ্রাম-সহ দিল্লি ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার প্রধান রাস্তাগুলো জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এর ফলে সকাল থেকে অফিসগামী মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হন। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী ১৭ আগস্ট পর্যন্ত এই অঞ্চলে বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। এই বৃষ্টির কারণে দিল্লি-এনসিআরের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।

উত্তর প্রদেশ: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি, দুর্ভোগ বাড়ছে

উত্তর প্রদেশের বরেলী, লখিমপুর, পিলভিট, শাহজাহানপুর, বাহারাইচ, সীতাপুর, শ্রাবস্তী, বলরামপুর, সিদ্ধার্থনগর, গোন্ডা এবং মহারাজগঞ্জের মতো জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। বৃহস্পতিবার পশ্চিম উত্তর প্রদেশের বেশিরভাগ এবং পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি জায়গায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে। যদিও ১৫ আগস্ট থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কমার সম্ভাবনা আছে। বৃষ্টির কারণে লখনউ জেলা প্রশাসন বৃহস্পতিবার প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সব সরকারি-বেসরকারি স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। বিশেষত গোমতী নগরে হাঁটু সমান জল জমে যাওয়ায় মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।

পাহাড়ে সতর্কতা: হিমাচল ও উত্তরাখণ্ডে ভূমিধসের আশঙ্কা

ভারী বৃষ্টির কারণে হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। হিমাচলের চাম্বা, কাংড়া এবং মান্ডি জেলায় কমলা সতর্কতা এবং উনা, বিলাসপুর, হামিরপুর, কুলু, সিমলা, সোলান ও সিরমৌরে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে, যা ১৯ আগস্ট পর্যন্ত বহাল থাকবে। ভূমিধস এবং আকস্মিক বন্যার কারণে অনেক রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

উত্তরাখণ্ডেও দেরাদুন, বাগেশ্বর, নৈনিতাল, পিথোরাগড়, তেহরি, পাউরি, চম্পাবত, রুদ্রপ্রয়াগ, উত্তরকাশী এবং চামোলিসহ অন্যান্য অংশে ১৪ থেকে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।

দক্ষিণ ভারত: তেলঙ্গানায় নিম্নচাপের প্রভাব

একইভাবে, নিম্নচাপের প্রভাবে দক্ষিণ তেলঙ্গানার অনেক এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হয়েছে। মধ্য, পশ্চিম এবং উত্তর তেলঙ্গানার বিভিন্ন জেলা যেমন ভিকারাবাদ, সাঙ্গারেড্ডি, মেডাক, সিদ্দিপেট, জনগাঁও, সিরসিলা, কামারেড্ডি, নিজামাবাদ, জাগিটিয়াল, পেড্ডাপল্লি, করিমনগর, আদিলাবাদ, আসিফাবাদ এবং নির্মল-এ মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। সামগ্রিকভাবে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই লাগাতার বৃষ্টি জনজীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।