রবিবারেও খোলা থাকে, চলে পঠন-পাঠন…সোমবারে কেন ছুটি এই স্কুলে? অদ্ভুত কারণ জেনেনিন

ব্রিটিশ শাসনের বিরোধিতা করে শুরু হওয়া এক ব্যতিক্রমী ধারা আজও বজায় রেখেছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের গোপালপুর মুক্তকেশী বিদ্যালয়। যখন ব্রিটিশদের চালু করা নিয়ম অনুযায়ী রবিবার ছিল ছুটির দিন, তখন এই স্কুল অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে রবিবার খোলা রেখেছিল এবং ছুটি ঘোষণা করেছিল সোমবার। সেই থেকে চলে আসা এই ঐতিহ্য আজও সসম্মানে পালিত হচ্ছে।

স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস বহনকারী এক স্কুল
১৯২২ সালের ৫ই জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয় এই বিদ্যালয়। ব্রিটিশ সরকারের কোনো রকম সাহায্য ছাড়াই দেশপ্রেমিকরা এটি গড়ে তুলেছিলেন। ১৯২০ সালে নাগপুরে মহাত্মা গান্ধী অসহযোগ আন্দোলনের প্রস্তাব আনলে, তার সমর্থনে ব্রিটিশদের নিয়ম বর্জন করাই ছিল এই স্কুলের প্রধান উদ্দেশ্য। তাই ব্রিটিশদের দেওয়া ‘রবিবার ছুটি’র নিয়মকে উপেক্ষা করে তারা রবিবার স্বাভাবিক পঠন-পাঠন চালু রাখে।

আজ স্বাধীনতার ৭৯ বছর পরেও এই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্রছাত্রীরা সেই ধারা বজায় রেখেছেন। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আজও প্রতি রবিবার স্কুলে ঘণ্টা বাজে, প্রার্থনা হয় এবং ক্লাস চলে। এর মাধ্যমে বর্তমান প্রজন্ম দেশের স্বাধীনতার জন্য আত্মবলিদান দেওয়া যোদ্ধাদের সম্মান জানানোর সুযোগ পায়।

কেমন চলে স্কুলের নিয়ম?
এই স্কুলে সপ্তাহের ছুটি থাকে সোমবার। ছাত্রছাত্রীরা স্কুলের এই ব্যতিক্রমী নিয়মের জন্য গর্ববোধ করে। তাদের কাছে এটি কেবল একটি স্কুল নয়, বরং দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক জীবন্ত ইতিহাস। গোপালপুর মুক্তকেশী বিদ্যালয় প্রমাণ করে, কীভাবে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তার প্রতিষ্ঠার মূল আদর্শকে যুগের পর যুগ ধরে বাঁচিয়ে রাখতে পারে।