‘আদি-নব্য’ বিবাদ অতীত, দিঘায় দুই প্রজন্মের মিলনে ঘুচবে দূরত্ব!

এবারের দুর্গাপূজায় দিঘা পর্যটকদের জন্য শুধু সমুদ্রের ঢেউ নয়, বয়ে আনছে সম্পর্কের নতুন জোয়ার। রামনগরের বালিসাই সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি তাদের ৫২তম বর্ষে এক অভিনব থিম নিয়ে আসছে, যার নাম ‘তরুণের নবজাগরণ’। এই থিমের মাধ্যমে নবীন ও প্রবীণ প্রজন্মের মধ্যে তৈরি হওয়া দূরত্ব ঘুচিয়ে একটি সেতুবন্ধন তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সময়ের ব্যবধান ঘোচানোর উদ্যোগ
পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা মনে করেন, গত কয়েক দশকে জীবনযাত্রার দ্রুত পরিবর্তন, প্রযুক্তির প্রভাব এবং চিন্তাভাবনার ভিন্নতার কারণে নবীন ও প্রবীণদের মধ্যে এক অদৃশ্য দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। এই দূরত্ব সমাজের বন্ধনকে দুর্বল করে তুলছে। তাই এই বছর দুর্গাপূজাকে এমনভাবে সাজানো হয়েছে, যাতে দুই প্রজন্ম একই মঞ্চে, একই আনন্দের মধ্যে মিলিত হতে পারে। সম্প্রতি খুঁটিপুজোর মাধ্যমে এই থিম বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে।

ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মেলবন্ধন
মণ্ডপসজ্জা এবং প্রতিমাতেও এই থিমের প্রতিফলন দেখা যাবে। একদিকে যেমন মা দুর্গা ও তার পরিবারকে সাবেকি, ঐতিহ্যবাহী রূপে দেখা যাবে, তেমনই মণ্ডপের সাজসজ্জায় থাকবে আধুনিকতার ছোঁয়া। আলো, রঙ, কারুকাজ এবং থিম-ভিত্তিক শিল্পকর্মের মাধ্যমে দর্শনার্থীদের কাছে এই সামাজিক বার্তা পৌঁছে দেওয়া হবে যে, প্রজন্মের মধ্যে ব্যবধান নয়, বরং বোঝাপড়া ও ভালোবাসা জরুরি।

পুজোর দিনগুলিতে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোকসজ্জা এবং শিল্প প্রদর্শনীর মাধ্যমে ‘তরুণের নবজাগরণ’ থিমটিকে জীবন্ত করে তোলা হবে। তরুণদের প্রাণোচ্ছলতা এবং প্রবীণদের অভিজ্ঞতার মিশেলে এক নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করাই এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য। দিঘার এই পুজো পর্যটক এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা নিয়ে আসবে, যা তাদের মনে করিয়ে দেবে যে একসঙ্গে চলার আনন্দই জীবনের সবচেয়ে বড় উৎসব। এবারের দুর্গাপূজা তাই দিঘায় শুধু দর্শনীয় মণ্ডপ বা প্রতিমার জন্য নয়, বরং এই অনন্য সামাজিক উদ্যোগের জন্যও স্মরণীয় হয়ে থাকবে।