৬০ কোটি টাকার প্রতারণা? ফের রাজ-শিল্পার বিরুদ্ধে দায়ের হলো মামলা

বিনোদন জগতের তারকা দম্পতি শিল্পা শেঠি ও রাজ কুন্দ্রা আবারো আইনি জটিলতায় জড়িয়েছেন। তবে এবার কোনো ব্যক্তিগত বিষয় বা চলচ্চিত্রের কারণে নয়, বরং ৬০ কোটি টাকার আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনায় শুধু রাজ কুন্দ্রা নন, তার স্ত্রী এবং জনপ্রিয় অভিনেত্রী শিল্পা শেঠিও জড়িয়েছেন, যা বলিউডের অন্দরে নতুন করে আলোচনা শুরু করেছে। মুম্বাইয়ের জুহু থানায় দায়ের করা এই মামলায় তাদের দুজনের সঙ্গে আরও একজন অজ্ঞাত ব্যক্তির নামও রয়েছে।
অর্থনৈতিক অপরাধ শাখার তদন্ত:
মুম্বাইয়ের অর্থনৈতিক অপরাধ শাখা (EOW) এক ব্যবসায়ীর অভিযোগের ভিত্তিতে এই মামলাটি দায়ের করেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, এই দম্পতি একটি অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্ম ‘বেস্ট ডিল টিভি প্রাইভেট লিমিটেড’-এর মাধ্যমে প্রায় ৬০.৪৮ কোটি টাকার আর্থিক জালিয়াতি করেছেন। অভিযোগকারী ব্যবসায়ী দীপক কোঠারির দাবি, তার দেওয়া অর্থ ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার না করে ব্যক্তিগত খরচের জন্য ব্যয় করা হয়েছে।
ঘটনার আদ্যোপান্ত:
দীপক কোঠারি নামের ওই ব্যবসায়ী জানিয়েছেন যে, ২০১৫ সালে তিনি এক এজেন্টের মাধ্যমে শিল্পা ও রাজ কুন্দ্রার সঙ্গে পরিচিত হন। ওই সময়ে তারা দুজনেই ‘বেস্ট ডিল টিভি’-এর পরিচালক ছিলেন। সেই সময়, শিল্পা শেঠির কোম্পানিতে ৮৭ শতাংশেরও বেশি শেয়ার ছিল। ব্যবসায়ী কোঠারি অভিযোগ করেন যে, এজেন্ট রাজেশ আর্য তাকে কোম্পানির জন্য ৭৫ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব দেন, যার উপর ১২% বার্ষিক সুদ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল। তবে বেশি কর এড়ানোর জন্য, তাকে ঋণ হিসেবে না দিয়ে বিনিয়োগ হিসেবে অর্থ প্রদান করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে একটি বৈঠক হয়, যেখানে সময়মতো অর্থ ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে চুক্তি চূড়ান্ত করা হয়। এই চুক্তির আওতায়, ব্যবসায়ী কোঠারি প্রায় ৬০.৪৮ কোটি টাকা এবং ৩.১৯ লক্ষ টাকার স্ট্যাম্প ডিউটি প্রদান করেন।
শিল্পা শেঠির ব্যক্তিগত গ্যারান্টি এবং কোম্পানির দেউলিয়াত্ব:
কোঠারি আরও জানান যে, ২০১৬ সালের এপ্রিলে শিল্পা শেঠি তাকে ব্যক্তিগতভাবে গ্যারান্টি দিয়েছিলেন। তবে এর কয়েক মাস পরই, অর্থাৎ সেপ্টেম্বরে, তিনি কোম্পানির পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপরই সামনে আসে কোম্পানির দেউলিয়া হওয়ার খবর, যেখানে ১.২৮ কোটি টাকার একটি দেউলিয়া মামলা প্রকাশ পায়।
ব্যবসায়ী কোঠারির দাবি, তিনি বারবার তার অর্থ ফেরত চেয়েছেন, কিন্তু তার আবেদনে কোনো কর্ণপাত করা হয়নি। তার অভিযোগে শিল্পা ও রাজ কুন্দ্রার বিরুদ্ধে ২০১৫ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে, যেখানে তারা ব্যবসার নাম করে টাকা নিয়ে তা নিজেদের ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ব্যবহার করেছেন। এই মামলা এখন মুম্বাই পুলিশের অর্থনৈতিক অপরাধ শাখার তদন্তাধীন।