বাঁকুড়ার তৃণমূল নেতা সেকেন্দার খান খুনে মূল অভিযুক্ত নাসিম শেখ গ্রেফতার

বাঁকুড়ার তৃণমূল নেতা সেকেন্দার খান খুনের ঘটনায় অবশেষে মূল অভিযুক্ত নাসিম শেখকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুরুলিয়ার মানবাজার থেকে তাকে আটক করা হয়। এর আগে এই খুনের ঘটনায় নাসিমের দুই ছেলে হাসিম শেখ ও ইব্রাহিম শেখকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এই নিয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মোট তিনজনকে গ্রেফতার করা হলো।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাতে সেকেন্দার খানকে গুলি করে খুন করা হয়। এরপর পুলিশ মঙ্গলবার সকালে নাসিমের দুই ছেলেকে গ্রেফতার করে। গোপন সূত্রের খবর পেয়ে পুলিশ পুরুলিয়ার মানবাজার থানার পাথরকাটা গ্রামে নাসিমের ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু ‘টাইগার’-এর বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে। পুলিশ যখন সেখানে পৌঁছায়, তখন নাসিম পালানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন।

তদন্তে এখনও পর্যন্ত এটা স্পষ্ট নয় যে, খুনের দিন নাসিম এবং তার দুই ছেলে ঘটনাস্থলে সরাসরি উপস্থিত ছিলেন, নাকি কেবল এই ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন। হত্যার জন্য ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটি এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ৭.৬৫ মিলিমিটার বোরের অটোমেটিক রিভলভার থেকে গুলি চালানো হয়েছিল।

মৃত সেকেন্দারের ময়নাতদন্তে তার দেহে তিনটি গুলির আঘাত পাওয়া গেছে এবং দুটি বুলেট উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া নাসিমের দুই ছেলেকে আদালত ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের একটি পুরনো ইতিহাস রয়েছে। প্রায় ছয় মাস আগে এক গোষ্ঠী সংঘর্ষে নাসিম শেখ গুলিবিদ্ধ হন এবং সেকেন্দারের বিরুদ্ধে সেই হামলার অভিযোগ উঠেছিল। তখন সেকেন্দারকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল, কিন্তু সম্প্রতি তিনি জামিনে ছাড়া পেয়ে ফিরে আসেন। ধারণা করা হচ্ছে, সেই ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই নাসিম তার অনুগামীদের নিয়ে এই খুনের পরিকল্পনা করেন।

বাঁকুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাকসুদ হাসান জানিয়েছেন, “এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে। দুই অভিযুক্তের মধ্যে পুরনো শত্রুতা ছিল, যা ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক কারণেও তীব্র হয়েছিল।” এই হত্যাকাণ্ডের পর এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।