মার্কিন শুল্ক বৃদ্ধিতে সঙ্কটে বাংলার চিংড়ি শিল্প, বিকল্প বাজারের সন্ধানে ব্যবসায়ীরা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আকস্মিক শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের জেরে বড় সঙ্কটের মুখে পড়েছে বাংলার চিংড়ি রফতানিকারীরা। ভারতীয় পণ্যের উপর শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করায় চিংড়ি ব্যবসায়ীরা চরম উদ্বেগে পড়েছেন। আপাতত তারা অপেক্ষা করছেন, আমেরিকা এই শুল্ক প্রত্যাহার করে কি না, তা দেখার জন্য।

আমেরিকা ভারতীয় চিংড়ির একটি বড় বাজার। দেশের মোট চিংড়ি রফতানির প্রায় ৪০ শতাংশ আমেরিকায় পাঠানো হয়। তাই হঠাৎ শুল্ক বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত কেবল বাংলা নয়, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং ওড়িশার চিংড়ি রফতানিকারীদেরও কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়েছে। যদি দ্রুত বিকল্প বাজার, যেমন ইউরোপ বা পূর্ব এশিয়ায় তৈরি করা না যায়, তবে এই শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন দেখা দেবে।

বর্তমানে ভারত থেকে প্রায় ৬৫ হাজার কোটি টাকার চিংড়ি আমেরিকায় রফতানি হয় এবং এর একটি বড় অংশ আসে বাংলা থেকে। দেশজুড়ে প্রায় ১,৮০০ রফতানিকারী এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। দিঘার একজন চিংড়ি রফতানিকারী শুভজিৎ মণ্ডল বলেন, “এত উচ্চ শুল্ক দিয়ে চিংড়ি রফতানি করলে বিশাল ক্ষতি হবে। আমরা আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করব। এরপর ইউরোপে নতুন বাজার খোঁজার চেষ্টা করব। তবে আমেরিকায় এতদিন আমাদের একটা বড় বাজার ছিল। দেখা যাক কী হয়।” তিনি জানান, অনেক রফতানিকারী এই বিপুল শুল্কের কারণে আমেরিকায় তাদের চালান স্থগিত রেখেছেন।

এই শুল্ক বৃদ্ধির কারণে উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় ৪০ লক্ষের বেশি মানুষ সরাসরি প্রভাবিত হবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আগে এই রফতানি শুল্ক ছিল মাত্র ৮.২ শতাংশ, যা পরে ২৫ শতাংশে বাড়ানো হয়। আগামী ২৭ আগস্ট থেকে তা আরও ২৫ শতাংশ বেড়ে ৫০ শতাংশ হবে, যা রফতানিকারীদের জন্য এক বড় আর্থিক ধাক্কা। এই পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হয় কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।