অবশেষে জল্পনার অবসান, বাংলায় শুরু হচ্ছে ভোটার তালিকায় নিবিড় পরিমার্জন (SIR)

সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিহারের পর এবার পশ্চিমবঙ্গেও শুরু হতে চলেছে ভোটার তালিকায় নিবিড় পরিমার্জন বা ‘এসআইআর’ (সার্ভিল্যান্স অফ ইনক্লুসিভ রেজিস্টার)। নির্বাচন কমিশন রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই এই প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টে এসআইআর সংক্রান্ত একটি শুনানিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষের আইনজীবী গোপাল শঙ্কর নারায়ণ জানান, গত ৮ আগস্ট নির্বাচন কমিশন রাজ্যকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে যে পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর শুরু হতে চলেছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা না করেই কীভাবে কমিশন এই প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে।
শুনানি চলাকালীন বিচারপতি সূর্যকান্ত মন্তব্য করেন, “পশ্চিমবঙ্গে এখনো এসআইআর শুরু হয়নি।” এর জবাবে গোপাল শঙ্কর নারায়ণ কমিশনের চিঠির প্রসঙ্গ তুলে ধরেন এবং বলেন, “পশ্চিমবঙ্গেও কোনো আলোচনা ছাড়া নিবিড় সমীক্ষা শুরু হতে পারে।”
অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ এবং আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এই শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টের সামনে এক মহিলার গায়ে আগুন দেওয়ার চেষ্টার ঘটনার কথা উল্লেখ করে জানান যে, রাজ্যে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। যদিও বিচারপতি সূর্যকান্ত সেই মুহূর্তে তার সওয়াল শুনতে রাজি হননি এবং জানান যে বাংলার প্রসঙ্গ উঠলে তাকে যথেষ্ট সময় দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরেই রাজনৈতিক মহলে এই জল্পনা চলছিল যে বিহারের মতো পশ্চিমবঙ্গেও এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে ২০০২ সালের পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকা আপলোড করা হয়েছে এবং ব্লক লেভেল অফিসারদের (বিএলও) প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, জাতীয় নির্বাচন কমিশন রাজ্যের কাছে এসআইআর নিয়ে প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চেয়েছিল। এর জবাবে গত ৭ আগস্ট রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছেন যে, রাজ্য ভোটার তালিকায় নিবিড় পরিমার্জন করতে প্রস্তুত। সমস্ত জেলার তথ্য সংগ্রহ করে নির্বাচন কমিশনে একটি রিপোর্টও পাঠানো হয়েছে।
এই পদক্ষেপ নিয়ে রাজনৈতিক চাপান-উতোর শুরু হয়েছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই প্রক্রিয়া নিয়ে আপত্তি জানানো হলেও, নির্বাচন কমিশন তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরতে নারাজ। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে এসআইআর প্রক্রিয়া কীভাবে সম্পন্ন হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।