‘কৃষকদের বঞ্চনা করছে রাজ্য সরকার’, সিঙ্গুরে আলুচাষিদের পাশে শুভেন্দু অধিকারী

রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সিঙ্গুরের আলু চাষিদের বঞ্চনার প্রতিবাদে আজ ভারতীয় জনতা কিষান মোর্চার ডাকে সিঙ্গুরের রতনপুর মোড়ে এক অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এই কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানান। মঞ্চ থেকে তিনি আলু চাষিদের দুর্দশা এবং রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে সরব হন।

শুভেন্দু অধিকারী তাঁর ভাষণে বলেন, “যে রাজ্যগুলিতে বিজেপি সংকল্পপত্রে যা যা বলেছিল, তা পূরণ করেছে। দিল্লিতে সবকিছু হয়েছে।” তিনি তৃণমূলের বিরুদ্ধে মুসলিম তোষণ এবং ভোট এলে বিভিন্ন ভাতা প্রদানের মতো কৌশলের অভিযোগ তোলেন।

আলু চাষিদের সমস্যা তুলে ধরে শুভেন্দু বলেন, “রাজ্যে ৬০ লক্ষ মেট্রিক টন আলুর প্রয়োজন হলেও, উৎপাদন হয় ১.৪ কোটি মেট্রিক টন। অতিরিক্ত আলু বাইরের রাজ্যে পাঠানো হয়। কিন্তু দু’বার পুলিশকে দিয়ে বর্ডার আটকেছে রাজ্য সরকার। এর ফলে উত্তরপ্রদেশ ও পাঞ্জাবের মতো রাজ্যগুলো বাংলার আলু নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।”

তিনি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে করা প্রতিশ্রুতির অভিযোগও তোলেন। শুভেন্দু বলেন, “ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এর সার্কুলার দেখুন, যেখানে রাজ্য সরকার ১৫ টাকা কেজি দরে ২ কোটি ২০ লক্ষ বস্তা আলু কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু তারা লোক দেখানো কিছু বস্তা কিনে কাজ শেষ করেছে। আজ রতনপুরে আলু ১২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, আর কৃষকরা পাচ্ছে মাত্র সাড়ে আট টাকা। এতে কোল্ড স্টোরেজ এবং অন্যান্য খরচ বাদ দিয়ে কৃষকদের প্রতি কেজি আলুতে ৩ টাকা লোকসান হচ্ছে।”

টাটাদের সিঙ্গুর প্রকল্প নিয়ে তিনি বলেন, “আমি মনে করি প্রয়াত রতন টাটার কোম্পানি দয়া করেছে। মাত্র ৭৬৬ কোটি টাকায় ফয়সালা করা হয়েছে। আমি যদি সরকারের কর্মচারী থাকতাম, তাহলে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কান মলে ২ হাজার কোটি টাকা আদায় করতাম।”

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফ্ল্যাটে থাকেন, আলু চাষে কখন বীজ পুততে হয়, সার লাগে, এসব তার কোনো ধারণা নেই। তাই সিঙ্গুরে যা করতে চেয়েছেন, সবকিছুতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।” তিনি টাটাদের কারখানার জমিতে ডিনামাইট দিয়ে সর্ষের বীজ বোনা এবং মাছ চাষের চেষ্টার ব্যর্থতার কথাও উল্লেখ করেন।

তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে কৃষকদের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দেবে। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অর্থনৈতিকভাবে কৃষকদের খুনের ব্যবস্থা করেছেন।” একইসঙ্গে কোচবিহারে তাঁর উপর আক্রমণের সময় অন্তঃসত্ত্বা পূরবী বর্মণের ওপর হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান তিনি।