২০০২-এর ভোটার লিস্টে নাম নেই BJP MLA-র মা-বাবার? ‘বেআইনি ভোটার’ বলে শুরু বিক্ষোভ

ভোটার তালিকায় অশোক কীর্তনীয়ার মা-বাবার নাম না থাকা সত্ত্বেও বিধায়কের নাম অন্তর্ভুক্তির অভিযোগ তুলে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘ বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়াকে ‘বেআইনি ভোটার’ আখ্যা দিয়েছে। মঙ্গলবার মতুয়া মহাসংঘের সদস্যরা বনগাঁ মহকুমা শাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে অবিলম্বে তার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দাবি করেছে।

মতুয়া মহাসংঘের বনগাঁ শাখার সম্পাদক প্রসেনজিৎ বিশ্বাস বলেন, “নির্বাচন কমিশনের ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় অশোক কীর্তনীয়ার নাম পাওয়া গেছে, কিন্তু সেই একই তালিকায় তার বাবা-মায়ের নাম নেই। অনেক খোঁজাখুঁজির পর আমরা ২০১০ সালের ভোটার তালিকায় তাদের নাম পাই, যা বনগাঁ পৌরসভার গান্ধিপল্লি এলাকার। একজন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী হয়ে তিনি কীভাবে আইনসভার সদস্য হতে পারেন, তা নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলছি।”

এই অভিযোগের পর মহকুমা শাসকের অফিসের সামনে মতুয়া মহাসংঘের সদস্যরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তাদের দাবি, অশোক কীর্তনীয়া বেআইনিভাবে ভোটার তালিকায় নাম তুলেছেন।

সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া বলেন, “আমার বাবা ১৯৫০ সালে বাংলাদেশ থেকে এদেশে এসেছিলেন এবং তার সমস্ত বৈধ কাগজপত্র আছে। ১৯৯৩ সালে আমার বাবা-মায়ের নাম ভোটার তালিকায় উঠেছিল। ২০০২ সালে কেন তাদের নাম ওঠেনি, সেই সময়কার বাম নেতৃত্বই তা বলতে পারবেন। এই অভিযোগগুলো আমাকে বিরক্ত করার জন্য করা হচ্ছে। তারা তাদের কাজ করবে, আমি আমার কাজ করব।”

এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “মা-বাবার আগে সন্তানের নাম ভোটার তালিকায় কীভাবে ওঠে, তার উত্তর অশোক কীর্তনীয়া এবং বিজেপিকে দিতে হবে। বিজেপি বাংলায় সিএএ এবং এনআরসি-এর নামে চক্রান্ত করছে।”

অন্যদিকে, বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিকাশ ঘোষ বলেন, “আমরা জানি, অশোক কীর্তনীয়ার বাবা ১৯৬০ থেকে ৬৫ সালের মধ্যে এদেশে এসেছিলেন এবং ১৯৯৩ সালেই তাদের নাম ভোটার কার্ডে ওঠে। যে দল হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ নিয়ে বাজে কথা বলে, তাদের আবার মতুয়া মহাসংঘ কবে থেকে হল? এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”

এই অভিযোগের পর নির্বাচন কমিশনের ‘ভুতুড়ে ভোটার’ ধরার তৎপরতার মধ্যে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হলো। এখন দেখার, এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়।