স্বাধীনতা দিবসে KBC-তে সোফিয়া-ব্যোমিকারা, শোনাবেন ‘বীরগাথা’, তাতেও নয়া বিতর্ক?

জনপ্রিয় কুইজ শো ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’ (KBC)-এর ১৭তম সিজনের আসন্ন স্বাধীনতা দিবসের বিশেষ পর্বটি বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এই পর্বে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সঙ্গে যুক্ত তিন সামরিক কর্মকর্তা—কর্নেল সোফিয়া কুরেশি, উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং এবং কমান্ডার প্রেরণা দেওস্থলীকে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। শোয়ের প্রোমো প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে সেনাবাহিনীর বাণিজ্যিকীকরণ এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন।

প্রোমোতে দেখা যায়, এই তিন কর্মকর্তা উপস্থাপক অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে আলোচনা করছেন। কর্নেল সোফিয়া কুরেশি জানান, কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে সন্ত্রাসী হামলার পর এই অভিযান শুরু হয়। তিনি বলেন, “এটি একটি নতুন ভারত, যা একটি নতুন চিন্তাভাবনা নিয়ে কাজ করে।” উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং জানান, এই মিশনটি মাত্র ২৫ মিনিটে সম্পন্ন হয়েছিল। কমান্ডার প্রেরণা দেওস্থলী, যিনি ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রথম মহিলা যুদ্ধজাহাজের কমান্ডার, বলেন যে, অভিযানে সমস্ত সন্ত্রাসী আস্তানা ধ্বংস করা হয়েছে, কিন্তু কোনো অসামরিক নাগরিকের ক্ষতি হয়নি।

তবে এই পর্বের প্রোমো প্রকাশের পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন যে, সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত কর্মকর্তাদের একটি বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানে এভাবে আমন্ত্রণ জানানো কি প্রোটোকলের লঙ্ঘন নয়? একজন ইউজার লিখেছেন, “কোনো দেশে সামরিক অভিযানের পর এমনটা দেখেছেন? চাকরিতে থাকা ব্যক্তির জন্যও কি এটি অনুমোদিত? এই সরকার নির্লজ্জভাবে সেনাবাহিনীকে তার তুচ্ছ রাজনীতি এবং অতি-জাতীয়তাবাদের জন্য ব্যবহার করছে।” আরেকজন মন্তব্য করেছেন, “আমাদের সেনাবাহিনী ছিল পবিত্র, রাজনীতির ঊর্ধ্বে। এটি কোনো রাজনৈতিক ব্র্যান্ড নয়।”

সেনাবাহিনীর প্রোটোকল অনুযায়ী, সামরিক পোশাক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা সামাজিক সমাবেশে পরার অনুমতি নেই। এমনকি গণপরিবহণ বা বাণিজ্যিক বিমানেও এটি পরা যায় না। যদি কোনো বেসরকারি কার্যকলাপে সামরিক পোশাকে অংশ নিতে হয়, তবে কমান্ডিং অফিসারের লিখিত অনুমতি প্রয়োজন। অতীতে মোহনলাল-এর মতো তারকার বিরুদ্ধেও এই ধরনের অভিযোগ উঠেছিল।

এই বিতর্ক সত্ত্বেও, এই পর্বের মাধ্যমে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ সামরিক মিশনের অজানা দিকগুলো তুলে ধরা হবে। এখন দেখার বিষয়, এই বিতর্ক শোয়ের নির্মাতাদের ওপর কোনো প্রভাব ফেলে কি না।