পরমাণু যুদ্ধের হুমকির পর ভারতের কাছে সিন্ধু জল চুক্তি পুনরায় চালুর আবেদন পাকিস্তানের

ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের নেতাদের পরমাণু হামলা এবং যুদ্ধের ফাঁকা হুমকির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইসলামাবাদ ভারতের কাছে সিন্ধু জল চুক্তির স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার জন্য আবেদন জানিয়েছে। এই ঘটনা কূটনৈতিক মহলে ব্যাপক বিস্ময় সৃষ্টি করেছে।

সম্প্রতি পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির একটি সমাবেশে বলেন, যদি পাকিস্তান অস্তিত্ব সঙ্কটের সম্মুখীন হয়, তবে তারা সর্বনাশা শক্তি দিয়ে প্রতিশোধ নিতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, “আমরা একটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। যদি আমরা মনে করি আমরা ধ্বংসের দিকে যাচ্ছি, তাহলে আমরা আমাদের সঙ্গে অর্ধেক বিশ্বকে ধ্বংস করে দেব।” এর কয়েক ঘণ্টা পর পাকিস্তানের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিও ভারতের বিরুদ্ধে জল নিয়ে যুদ্ধের হুমকি দেন।

এই চরম যুদ্ধংদেহী বক্তব্যের পরপরই পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রক একটি বিবৃতি জারি করে। সেই বিবৃতিতে তারা ভারতকে অনুরোধ করে, “অবিলম্বে সিন্ধু জল চুক্তির স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু করতে এবং এই চুক্তির সব শর্ত পূর্ণ সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতে।” পাকিস্তান আরও দাবি করেছে, ভারতের তৈরি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর ডিজাইন চুক্তির শর্ত অনুযায়ী হওয়া উচিত।

জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে গত ২২ এপ্রিল পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করে দেয়। ভারত স্পষ্ট জানিয়েছিল, সন্ত্রাসবাদকে সমর্থনকারী দেশের সঙ্গে কোনো ‘বিশ্বাসভিত্তিক দ্বিপাক্ষিক চুক্তি’ বজায় রাখা সম্ভব নয়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পাকিস্তানের এই দ্বিচারিতা তাদের অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক চাপের প্রতিফলন। চীন এবং মধ্যপ্রাচ্যের আর্থিক সহায়তায় ঘাটতি, আইএমএফ-এর কঠোর শর্ত এবং অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পাকিস্তান চায় আন্তর্জাতিক মহলে নিজেদের ‘শান্তিপ্রিয় রাষ্ট্র’ হিসেবে তুলে ধরতে। এই কারণে একদিকে আগ্রাসী হুমকি এবং অন্যদিকে শান্তিপূর্ণ অনুরোধ—এগুলো সবই কৌশলগত চাল হতে পারে।