ভোটার তালিকা থেকে বেআইনিভাবে নাম বাদ দেওয়ার অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের কড়া বার্তা

বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধন প্রক্রিয়ায় বেআইনিভাবে নাম বাদ দেওয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট কড়া বার্তা দিয়েছে। আদালত জানিয়েছে, যদি এই অভিযোগের প্রমাণ মেলে, তাহলে সেপ্টেম্বর মাসেও এই প্রক্রিয়া বাতিল করা হতে পারে। আপাতত সুপ্রিম কোর্ট এই প্রক্রিয়ার উপর কোনো স্থগিতাদেশ জারি করেনি।

অভিযোগ ও সুপ্রিম কোর্টের শুনানি:

সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছিল, যেখানে অভিযোগ করা হয় যে বিহারে বিশেষ সংশোধনীর নামে ভোটার তালিকা থেকে বহু মানুষের নাম বেআইনিভাবে বাদ দেওয়া হচ্ছে। মামলাকারীদের যুক্তি ছিল, নাগরিকত্ব যাচাই করার কোনো ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের নেই। মঙ্গলবার বিচারপতি সূর্য কান্তের বেঞ্চে এই মামলাগুলির শুনানি হয়।

এর জবাবে নির্বাচন কমিশন আদালতে জানায়, তারা ভোটার তালিকা শুদ্ধিকরণের কাজ করছে এবং এই কাজে যাতে কোনো বাধা না দেওয়া হয় তার জন্য আবেদন করে। আদালত কমিশনের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত হয়ে বলে যে, শুধু আধার কার্ড থাকলেই কেউ নাগরিক হন না, নাগরিকত্ব যাচাই করা অত্যন্ত জরুরি।

মৃত দেখানোর অভিযোগ:

মামলাকারীদের পক্ষ থেকে আদালতে দুজন জীবিত ভোটারকে হাজির করা হয়, যাদের নাম সংশোধিত তালিকায় মৃত হিসেবে দেখানো হয়েছে। আদালত এটিকে তথ্য আপলোড করার সময়কার ভুল বলে ব্যাখ্যা করেছে। একই সাথে মামলাকারীরা প্রশ্ন তোলেন, আধার ও ভোটার কার্ড ছাড়াও অন্যান্য নথি চাওয়ার অধিকার কমিশনের আছে কি না।

তবে নির্বাচন কমিশন এই সমস্ত অভিযোগকে অনুমানভিত্তিক ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে। কমিশন আরও জানায়, ভোটার তালিকা সংশোধনের বিরোধিতা করে কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি এখনও পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হননি। সুপ্রিম কোর্টও বলে যে, কমিশন যে নথিগুলো চাইছে তা বিহারের কোনো বাসিন্দার কাছে নেই, এই যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়।

কমিশনের প্রতিশ্রুতি ও সময়সীমা:

গত সপ্তাহে নির্বাচন কমিশন সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছিল যে, আগাম নোটিস এবং নির্দেশ ছাড়া তারা কারও নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেবে না। সংশোধিত খসড়া তালিকা নিয়ে কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তির আপত্তি থাকলে ১লা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবেদন করা যাবে বলেও কমিশন জানিয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের এই মন্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট যে, বিহারের ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়াটি এখন আদালতের কঠোর পর্যবেক্ষণে রয়েছে। যদি বেআইনি কার্যকলাপের কোনো প্রমাণ মেলে, তাহলে বড় ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।