গভীর রাতে ভয়াবহ গঙ্গা ভাঙন, ঘুমের মধ্যেই নদী গর্ভে তলিয়ে গেল পরপর দশটি বাড়ি

মঙ্গলবার ভোররাতে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জে ভয়াবহ গঙ্গা ভাঙনে আট থেকে দশটি বাড়ি গঙ্গা গর্ভে তলিয়ে গেছে। হঠাৎ করে শুরু হওয়া এই ভাঙনে উত্তর চাচন্ড এবং মধ্য চাচন্ড গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ঘুমন্ত অবস্থায় এই বিপর্যয় ঘটায় অনেকে কোনোমতে প্রাণ বাঁচালেও, গৃহস্থালি ও আসবাবপত্র কিছুই রক্ষা করতে পারেননি।
ভোর রাতের বিপর্যয়:
মঙ্গলবার ভোররাত থেকে গঙ্গার পাড়ে ভাঙন শুরু হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা কিছু বোঝার আগেই একাধিক বাড়ি তলিয়ে যেতে শুরু করে। মাধুরী সরকার, পলাশ সিংহ, লোহারাম সিংহ, অরিজিৎ বর্মন, লক্ষণ বর্মন সহ আরও বেশ কয়েকটি পরিবারের বাড়ি সম্পূর্ণভাবে তলিয়ে গেছে। চোখের সামনে নিজেদের সর্বস্ব হারিয়ে এখন দিশেহারা এই পরিবারগুলো।
এছাড়াও, এই ভাঙনের ফলে বেশ কয়েকটি গবাদি পশু এবং বহু গাছপালা গঙ্গা গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গঙ্গা সংলগ্ন একটি প্রাচীন কালীমন্দিরেও বড় ধরনের ফাটল দেখা দিয়েছে, যা যেকোনো মুহূর্তে তলিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা:
সকাল থেকেই ভাঙন কবলিত এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কিত অবস্থায় যে যেদিকে পারছেন ছুটছেন। নিজেদের সামান্য আসবাবপত্র ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে চলে যাচ্ছেন। কিন্তু কোথায় যাবেন এবং কীভাবে জীবনযাপন করবেন, তা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় ভুগছেন তারা।
গত কয়েক দিন ধরে সামশেরগঞ্জের কয়েকটি গ্রামে বন্যার আতঙ্ক ছিল। এরই মধ্যে এই ভয়াবহ ভাঙন স্থানীয়দের দুশ্চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এই মুহূর্তে কয়েকশো পরিবার ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। সাধারণ মানুষ অবিলম্বে প্রশাসনের কাছে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছেন। তাদের দাবি, জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হোক এবং ভাঙন রোধে স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হোক।