“বিহারে SIR-এ ১২ জন জীবিতকে মৃত দেখানো হয়েছে”-অভিযোগ শুনেই যা বললো সুপ্রিম কোর্ট?

বিহারের ভোটার তালিকার ‘বিশেষ নিবিড় সংশোধন’ (SIR) প্রক্রিয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে তুমুল বিতর্ক চলছে। মঙ্গলবার বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চে চলা এই শুনানিতে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে তীব্র অভিযোগ তুলেছেন সিনিয়র আইনজীবী কপিল সিব্বল। তিনি দাবি করেছেন, বিহারের একটি ছোট এলাকায় ১২ জন জীবিত ভোটারকে ‘মৃত’ বলে দেখানো হয়েছে, যা কমিশনের গাফিলতি প্রমাণ করে।
কপিল সিব্বল আদালতে জানান যে, বুথ লেভেল অফিসাররা ঠিকভাবে কাজ করেননি। যখন বিচারপতি সূর্য কান্ত প্রশ্ন করেন, “যাঁরা জীবিত তাঁরা কেন আদালতে আসেননি?”, তখন সিব্বল জবাব দেন যে, ভুক্তভোগীরা অন্য নানা আবেদনে ব্যস্ত রয়েছেন এবং তাদের সবাইকে আদালতে আনা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখানোর তথ্য নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হয়েছিল এবং সেই সংক্রান্ত একটি ভিডিও প্রমাণও রয়েছে। তাই সেই নামগুলো পুনরায় ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
সিব্বলের অভিযোগ, খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের আগে ফর্ম-৪ পাঠানো হয়নি, যা জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই আইন অনুযায়ী, কোনো অভিযোগকারীর কাছে যথাযথ প্রমাণ না থাকলে ভোটার তালিকা থেকে কারও নাম বাদ দেওয়া যায় না। অথচ এই ক্ষেত্রে সেই নিয়ম মানা হয়নি।
আবেদনকারীর আরেক আইনজীবী গোপাল শঙ্কর নারায়ণ বলেন, আগের শুনানিতে আদালত বলেছিল যে গণহারে নাম বাদ পড়লে আদালত হস্তক্ষেপ করবে। তিনি অভিযোগ করেন, খসড়া তালিকায় ৬৫ লক্ষ নাম বাদ পড়েছে, যার কোনো তালিকা কমিশন প্রকাশ করেনি।
এদিকে, নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী সিব্বলের অভিযোগের বিরোধিতা করে বলেন, এটি কেবল একটি খসড়া তালিকা। তিনি জানান, যাদের আপত্তি আছে তারা আপত্তি দাখিল করে সংশোধনের জন্য আবেদন করতে পারেন। খসড়া তালিকায় কিছু ত্রুটি থাকা স্বাভাবিক, তাই সংশোধনের প্রক্রিয়া এবং সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, যদি কোনো জীবিত ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা করা হয়, তাহলে তাকে আদালতে হাজির করে ত্রুটি সংশোধন করা উচিত। এর জবাবে সিব্বল আবারও বলেন, “প্রায় প্রতিটি বুথেই এই অবস্থা এবং সবাইকে আদালতে আনা সম্ভব নয়।”
সুপ্রিম কোর্টে এই শুনানি ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়া এবং নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার স্বচ্ছতা নিয়ে এক বড় প্রশ্নচিহ্ন তৈরি করেছে। এখন দেখার বিষয়, আদালত এই বিষয়ে কী নির্দেশ দেয়।