সুপ্রিম কোর্টে OBC মামলার শুনানি পিছিয়ে সেপ্টেম্বরে, জয়েন্টের ফল কবে হবে প্রকাশ?

ওবিসি শংসাপত্র সংক্রান্ত মামলার দ্রুত শুনানির জন্য রাজ্য সরকারের আবেদন আবারও খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি বি. আর. গাভাইয়ের ডিভিশন বেঞ্চ এই আবেদন প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছে যে, এই মামলার পরবর্তী শুনানি নির্ধারিত দিন, আগামী ৯ সেপ্টেম্বরই হবে। ফলে, রাজ্যকে এখন কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনেই জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে হবে, যা লক্ষ লক্ষ পড়ুয়ার ভবিষ্যৎকে অনিশ্চয়তার মুখে ফেলেছে।
ঘটনার সূত্রপাত:
রাজ্য সরকার ওবিসি শংসাপত্রের বিজ্ঞপ্তি সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। হাইকোর্ট তার রায়ে বলেছিল যে, ২০১০ সালের পরে ওবিসিভুক্ত হওয়া জনগোষ্ঠীগুলোকে তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে এবং শুধুমাত্র পুরনো ৬৬টি ওবিসি গোষ্ঠীই বিশেষ সংরক্ষণের সুবিধা পাবে। এর ফলে রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের ফল প্রকাশ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।
গত ২৮ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের রায়ের উপর একটি অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। কিন্তু সোমবার সেই মামলার শুনানি এক মাস পিছিয়ে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার আবারও দ্রুত শুনানির জন্য আবেদন জানানো হলে প্রধান বিচারপতি গাভাই তা খারিজ করে দেন।
সুপ্রিম কোর্টের অবস্থান:
আদালতে দ্রুত শুনানির আর্জি জানানোর সময় আইনজীবী কুণাল মিমানি বলেন, এই বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্ট একের পর এক নির্দেশ দিয়েই যাচ্ছে। এতে বিরক্ত হয়ে প্রধান বিচারপতি গাভাই বলেন, “আমরা তো হাইকোর্টকে কোনো নির্দেশ দেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেছি। এক কাজ করুন, আপনি আদালত অবমাননার একটি নতুন আবেদন জমা দিন।” এরপরেই তিনি দ্রুত শুনানির আবেদন নাকচ করে দেন এবং জানান যে, নির্ধারিত দিনেই এই মামলার শুনানি হবে।
পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত:
রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা গত ২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল। প্রায় তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এই মামলার জটের কারণে ফল প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। প্রথমে ৭ আগস্ট ফল প্রকাশের কথা থাকলেও, হাইকোর্টের নির্দেশে তা বাতিল হয়ে যায়। এর ফলে শুধু ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষাই নয়, বরং জেইএলইটি, প্রেসিডেন্সির স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের প্রবেশিকা পরীক্ষা, নার্সিং, প্যারামেডিক্যাল-সহ আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার ফল নিয়েও জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
এখন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, রাজ্যকে হয় সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে, অথবা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে পুরনো নিয়ম অনুযায়ী মেধাতালিকা প্রকাশ করতে হবে। রাজ্যের লক্ষ লক্ষ পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ এখন সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত রায়ের ওপর নির্ভরশীল।