এসি লোকালে ‘বন্দে ভারত’-এর স্বাদ! ধাক্কাধাক্কি থেকে রেহাই পেয়ে উচ্ছ্বসিত নিত্যযাত্রীরা

অবশেষে প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে পশ্চিমবঙ্গের প্রথম শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লোকাল ট্রেন চালু হলো। রবিবার উদ্বোধনের পর সোমবার থেকে বাণিজ্যিকভাবে শিয়ালদা-রানাঘাট রুটে পরিষেবা শুরু করেছে এই এসি লোকাল। সাধারণ লোকালের ভিড় এবং গরম থেকে মুক্তি পেয়ে যাত্রীরা এই ট্রেনে যাত্রা করে ‘বন্দে ভারত’-এর মতো অনুভূতি পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
যাত্রীদের মুখে হাসি
শিয়ালদা-রানাঘাট রুটে নিয়মিত যাতায়াতকারী নিত্যযাত্রীদের কাছে এই এসি লোকাল যেন এক নতুন অভিজ্ঞতা। খড়দার বাসিন্দা দেবব্রত রায় বলেন, “মনে হচ্ছে যেন বন্দে ভারত ট্রেনে উঠেছি। ঘুরতে যাচ্ছি বলে মনে হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন যে, লোকাল ট্রেনের ঠাসাঠাসি ভিড় এখানে নেই, যা যাত্রাকে অনেক আরামদায়ক করে তুলেছে।
প্রথমবার এই ট্রেনে যাত্রা করে কাঁচড়াপাড়ার বাসিন্দা ক্ষুদিরাম পান্ডা বলেন, “দমদম থেকে মেট্রোতে যাতায়াত করি, তবে এসি লোকাল ট্রেনে চেপে খুব ভালো লাগছে। আজকের এই ট্রেন সফর একেবারে অন্যরকম।”
মিঠুন চক্রবর্তী নামে এক নিত্যযাত্রী বলেন, “সারাদিনের কাজ শেষ করে আমাদের মতো বয়স্ক মানুষ যদি দিনের শেষে একটু ঠান্ডায় বাড়ি ফিরতে পারেন, তাহলে খুব সুবিধা হয়। রেলকে এর জন্য সাধুবাদ জানাই।”
ভাড়ার হার এবং পরিষেবার মান
যাত্রীরা জানিয়েছেন, এই এসি লোকালের ভাড়া সাধ্যের মধ্যেই রাখা হয়েছে। স্যামুয়েল গিল্লা নামে এক যাত্রী বলেন, “ট্রেনের যে ভাড়া ধার্য করা হয়েছে তা ঠিকই আছে।” পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী জানিয়েছেন, আপাতত দিনে এক জোড়া ট্রেন এই রুটে চলবে। ভালো ভিড় হচ্ছে এবং বিকেলের ট্রেনেও যাত্রী সংখ্যা চোখে পড়ার মতো।
রেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে যাত্রীদের টিকিট কেটে যাতায়াত করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। পাশাপাশি, ট্রেনে নিয়মিত নজরদারি এবং মহিলা কামরায় রেল পুলিশের পাহারার বন্দোবস্তও রয়েছে। এই পদক্ষেপগুলি যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং স্বচ্ছতার ব্যাপারে আশ্বস্ত করছে।
ভবিষ্যতের পরিকল্পনা
যাত্রীরা দ্রুত আরও এসি লোকাল ট্রেনের দাবি জানিয়েছেন। জবাবে রেলের তরফে জানানো হয়েছে, খুব শীঘ্রই আরও এসি ট্রেন চালু করা হবে। তবে দ্বিতীয় ট্রেনটি কোন রুটে চলবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। পশ্চিমবঙ্গের গণপরিবহণকে আরও উন্নত ও আরামদায়ক করে তুলতে এই এসি লোকাল ট্রেন একটি বড় মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন সবাই।